Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 1:18 am

ইস্টার্ন ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ দুজনের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) একটি শাখায় গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় দুজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের ও আর নিজাম রোড শাখার ব্যাংকিং প্রায়োরিটি ম্যানেজার মো. ইফতেখারুল কবির ও চট্টগ্রামের খুলশী থানার ৩ নম্বর লেনের নিশাত এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে মাহমুদুল হাসান। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুনসী আব্দুল মজিদ এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে আসামি মো. ইফতেখারুল কবিরকে ২৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডসহ এক কোটি চার লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং অপর আসামি মাহমুদুল হাসানকে ১৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ডসহ ৭৬ লাখ ৩০ হাজার জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর চার মাস কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদুল হক এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এক নম্বর আসামি মো. ইফতেখারুল কবিরকে দেয়া ২৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের মধ্যে

কমপক্ষে ১৩ বছর সাজা ভোগ করতে হবে। একই সঙ্গে অপর আসামি মাহমুদুল হাসানকে দেয়া ১৩ বছর কারাদণ্ডের মধ্যে কমপক্ষে পাঁচ বছর কারাভোগ করতে হবে।’

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৪ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত ইফতেখারুল কবির ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে অপর আসামি মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে যোগসাজশ করে গ্রাহকের হিসাব থেকে বেনামে হিসাব খুলে অর্থ স্থানান্তর করেন। এক নম্বর আসামি ইফতেখারুল ২০১৪ সালের ৩ জুলাই ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের ও আর নিজাম রোড শাখায় কর্মরত ছিলেন।

ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের তিন গ্রাহক যথাক্রমে অন্যন্য বডুয়া, রুপন কিশোর বড়ুয়া ও সুপ্রভা বড়ুয়ার হিসাব থেকে মোট ৫০ লাখ টাকার এফডিআরের অর্থ গ্রাহকের স্বাক্ষর নকল এবং সিল ও প্যাড জালিয়াতি করে ব্যাংকের রাখা এফডিআরের সমুদয় অর্থ মোট ৫০ লাখ টাকা ফান্ড স্থানান্তর করার নামে উঠিয়ে নেন আসামিরা।

এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১-এর উপসহকারী পরিচালক বর্তমানে সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪২০, ৪০৯, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ৪৭৭ (ক) ও ১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২-এর সহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দায়ের করা ১১টি সিরিজ মামলার বিচারকাজ চলমান। তার মধ্যে এটি প্রথম রায়।’