নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে দেশের একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারিতে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই শোধনাগারে পাইপলাইনে আগুন লাগে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তা নেভানো হয় বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আমদানি করা জ্বালানি তেল চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নির্মিত সরকারি এই শোধনাগারে পরিশোধনের পর সারাদেশে সরবরাহ করা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) আবদুল হামিদ বলেন, রিফাইনারির মিটারিং সেকশনে কোনো কারণে আগুন লেগে যায়। শিগগির আমরা তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। ১২টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ১২টা ৪৫ মিনিটে পুরোপুরি নির্বাপন সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, যেখানে আগুন লেগেছিল, ওই অংশে একসঙ্গে ৭০ থেকে ৮০টা ছোট ছোট পাইপ ছিল। এটা একটা জংশনের মতো। পাশেই তেলের একটা পিটে আগুন লাগে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের বন্দর, পতেঙ্গা, ইপিজেড,
আগ্রাবাদÑএ ৪টি ইউনিটের কর্মীরা ৭টি গাড়ি নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান বলেন, মিটারিং সেকশনের পাশের একটি পিটে আগুন লাগে। আগুনে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
অগ্নিকাণ্ড তদেন্ত সাত সদস্যের একটি কমিটি হয়েছেÑজানিয়ে তিনি বলেন, জিএম (অপারেশন্স অ্যান্ড প্ল্যানিং) রায়হান আহমাদকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের পর দুপুরে ইস্টার্ন রিফাইনারি পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন-বিপিসি’র পরিচালক (অপারেশন্স ও পরিকল্পনা) খালিদ আহম্মেদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সিসিটিভি আছে এখানে। অন্যান্য যারা প্রত্যক্ষদর্শী আছেন, এখানে তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কারণ উদঘাটন করে আমাদের জানাবে। আমরা জানলে আপনাদের জানাব।
ওয়েল্ডিংয়ের কাজের সময় আগুন লাগে কি নাÑজানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি ইআরএলের মূল স্থাপনায় কোনো আগুন নয়। এটি এসপিএম প্রজেক্টে পাইপলাইন টার্মিনাল ফ্যাসিলিটিজ যেটা, ওটার ডেভেলপমেন্ট কাজ চলছিল। টেকনিক্যাল নো হাউ যাদের আছে, তারা দেখবেন কেন আগুন লেগেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর কুলিং করার জন্য সার্বক্ষণিক পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে উত্তাপজনিত কারণে আবার কোনো ঘটনা না হয়।
ইআরএলের কার্যক্রম স্বাভাবিক আছেÑজানিয়ে খালিদ বলেন, একটা পিটে আগুন লাগে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড এবং ইআরএলের ফেন্সিয়ের মাঝামাঝি অংশে আগুন লাগে। ?মূল প্লান্ট থেকে অনেক দূরে ঘটনাস্থল।
আগুনে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনিÑজানিয়ে তিনি বলেন, ইআরএলের নিজস্ব ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা খুবই আধুনিক। যখনই কোনো কাজ হয় ইন্টারনাল ফায়ার ফাইটাররা প্রস্তুত থাকেন। ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তারা ব্যবস্থা নিয়েছে। ফলে একেবারেই ন্যূনতম ক্ষয়ক্ষতিতে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।