Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 5:45 pm

ঈদযাত্রায় ট্রাফিক নির্দেশনায় উড়বে ড্রোন: হাইওয়ে পুলিশপ্রধান

প্রতিনিধি, কুমিল্লা : ঘরমুখো মানুষের স্বস্তির ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে ড্রোনের মাধ্যমেও ট্রাফিক নির্দেশনা দেয়ার ‘চেষ্টা করা হবে’ বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশপ্রধান মো. শাহাবুদ্দিন খান।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পরিদর্শনে এসে গতকাল রোববার দুপুরে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার আলেখারচর বিশ্বরোড এলাকায় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মহাসড়কের নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিদর্শনের সময় তিনি সাংবাদিকদের এসব বলেন।

হাইওয়ে পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত  মহাপুলিশ পরিদর্শক বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন ও স্বস্তিদায়ক করতে দেশের সব মহাসড়কে পুলিশের সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে জেলা পুলিশ, প্রশাসনসহ বিভিন্ন ইউনিট একসঙ্গে কাজ করছে। ঈদে মানুষের বাড়ি ফেরাকে আনন্দময় করতে আমরা সবাই মাঠে আছি। ঈদের ছুটি শেষ হওয়া পর্যন্ত এটা অব্যাহত থাকবে।’

হাইওয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘প্রযুক্তি আমাদের সেবার মান উন্নত করেছে, আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করেছে। এজন্য এবারও আমরা বডিওর্ন ক্যামেরা, ড্রোন ক্যামেরা ও সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করছি।’

‘বিশেষ করে যেখানে যানজটের সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে আমাদের ড্রোন থাকবে। ড্রোনের মাধ্যমে আমরা ট্রাফিক নির্দেশনা দেয়ার চেষ্টা করব। পুরো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এখন সিসি ক্যামেরার আওতায়। আমরা প্রতিনিয়ত মহাসড়ক পর্যবেক্ষণ করছি। বিগত যেকোনো বছরের চেয়ে এবারের ঈদযাত্রা অনেক বেশি নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে।’

শাহাবুদ্দিন খান আরও বলেন, ‘ঈদের আগে থেকে আমরা দেশের সব মহাসড়কে যানজটসহ সব সমস্যার কারণগুলো চিহ্নিত করেছি। এখন সেগুলো মাথায় রেখে কাজ করছি।’

‘আপনারা জেনে থাকবেন, কয়েকদিন আগে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় মহাসড়কের পাশের অবৈধ স্থাপনা, হাটবাজার উচ্ছেদ করা হয়েছে। ঈদসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে মানুষের যাতায়াত সহজতর করতে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়ে থাকে। আমরা সে অনুযায়ী মহাসড়কগুলোয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আজ ঈদযাত্রার তৃতীয় দিন চলছে। এ পর্যন্ত দেশের মহাসড়কগুলোয় বড় কোনো যানজটের দৃশ্য চোখে পড়েনি। সব জায়গায় গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মহাসড়ক যানজট ও ভোগান্তিমুক্ত রাখতে শুধু পুলিশই নয়। যানবাহনের চালকরাও বড় একটি ভূমিকা রাখেন। এছাড়া যাত্রী যারা এ যাত্রায় অংশীদার রয়েছেন, তারাও একটা বড় ভূমিকা রাখেন। তারা যদি তাদের দায়িত্বটা ঠিকভাবে পালন করেন, তারা যদি সচেতন থাকেন, তারা যদি অনিরাপদ ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াতে শামিল না হন তাহলে একটা সমন্বিত নিরাপদ ঈদযাত্রা উপহার দেয়া সম্ভব হবে। আরও দুদিন সামনে রয়েছে। ৮ এবং ৯ তারিখ মানুষ স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদ্?যাপন করতে যাতায়াত করবেন। আমরা বিশ্বাস করি, বিগত দিনগুলোর মতো আগামী দিনগুলোতেও ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন করতে পারব।’

এ সময় মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকদের সঙ্গে কথা বলেন হাইওয়ে পুলিশপ্রধান।

তিনি যাত্রী ও চালকদের ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিরাপদ যাত্রা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেন। পাশাপাশি নির্ধারিত ভাড়ায় যাত্রী আনা-নেয়ার পরামর্শ দেন।

হাইওয়ে পুলিশ প্রধান আরও বলেন, ‘ঈদযাত্রাকে নিরাপদ করতে পুলিশের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এর পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতাও প্রয়োজন। আবার তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে কোনো পিকআপ বা খোলা ট্রাকে কেউ যাতে না উঠে সেদিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি। ঝুঁকিপূর্ণ ঈদ যাত্রাকে আমরা কখনও সমর্থন করি না। এছাড়া যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটলে পুলিশের পেট্রোল টিম দ্রুত ব্যবস্থা নেবে। ঈদের পর রাস্তা ফাঁকা থাকায় যানবাহনের বেশি গতির কারণে দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। তাই সেই পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করতেও বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

এ সময় হাইওয়ে পুলিশের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস) মাহফুজুর রহমান, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (পূর্ব) মাহবুবুর রহমান, হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার পদে থাকা অতিরিক্ত উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক খাইরুল আলম, কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান, কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শামস তাবরেজ, হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল আলম সরকার, কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুল হাসান, ময়নামতি ক্রসিং হাইওয়ে থানার ওসি ইকবাল বাহার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।