ঈদযাত্রায় সড়কে ২৮৫ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে ১৪ দিনে (১৬-২৯ এপ্রিল) দেশে ২৪০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৮৫ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৩৩ জনই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। তবে আরেক বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে এ সময়ে (১৫-২৯ এপ্রিল) নিহতের সংখ্যা ৩২৮, যা গত বছরের তুলনায় ২১ ভাগ কম।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, ২৪০টি দুর্ঘটনা নিহতের পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪৫৪ জন। আর নিহতের মধ্যে নারী ২৬ ও শিশু ৫৩ জন। এছাড়া ১২৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৩৩ জন, যা মোট নিহতের ৪৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৫২ দশমিক ৯১ শতাংশ।

সংস্থাটির হিসাবে, এই সময়ে পাঁচটি নৌ-দুর্ঘটনায় আটজন নিহত ও দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন। ১১টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত এবং ৬১ জন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে সংগঠনটি।

অন্যদিকে একই দিন রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, এবারের ঈদযাত্রার ১৫ দিনে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩২৮ জন নিহত এবং ৫৬৫ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া সড়কের সঙ্গে রেল ও নৌপথ মিলিয়ে দুর্ঘটনার সংখ্যা ৩৪১টি। এসব দুর্ঘটনায় ৩৫৫ নিহত ও ৬২০ জন আহত হয়েছেন।

তাদের হিসাবে, এ বছরের ঈদযাত্রায় সড়কে ভোগান্তি কমার পাশাপাশি গত বছরের তুলনায় দুর্ঘটনা কমেছে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ, প্রাণহানি কমেছে ২১ দশমিক ১ শতাংশ এবং আহত ৩৩ শতাংশ কমেছে।

ঈদযাত্রা শুরুর দিন ১৫ এপ্রিল থেকে কর্মস্থলে ফেরার ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত (১৫ দিন) রেলপথে ২৭টি ঘটনায় ২২ জন নিহত ও ৫৫ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ১০টি দুর্ঘটনায় ০৫ জন নিহত ও ২২ জন নিখোঁজ রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এবারও সড়ক দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। ঈদযাত্রায় ১৬৫টি বাইক দুর্ঘটনায় ১৬৭ জন নিহত ও ১২০ জন আহত হয়েছে। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৫৪ দশমিক ৩ শতাংশ, নিহতের ৫১ শতাংশ এবং আহতের ২১ দশমিক ৩ শতাংশ প্রায়।

যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্র

দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যান তুলে ধরে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, এসব দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী নিহত হয়েছেন ১৩৩ জন (৪৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ), বাসযাত্রী ৯ জন (৩ দশমিক ১৫  শতাংশ), ট্রাক-পিকআপ-ট্রলি আরোহী ১৫ জন (৫ দশমিক ২৬  শতাংশ), প্রাইভেট কার আরোহী দুই জন (০ দশমিক ৭০ শতাংশ), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা) ৫১ জন (১৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-চাঁন্দের গাড়ি-টমটম-লাটাহাম্বা) ১০ জন (৩ দশমিক ৫০ শতাংশ) এবং প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান-বাইসাইকেল আরোহী ১৩ জন (৪ দশমিক ৫৬  শতাংশ) নিহত হয়েছেন। ২০২২ সালের ঈদুল ফিতর উদযাপনকালে ১২৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৫৬ জন নিহত হয়েছিল। এই হিসাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণহানি কমেছে ১৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০