নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদুল আজহায় সড়ক, রেল ও নৌপথে সম্মিলিতভাবে ২৪৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এসব ঘটনায় ২৫৩ জন নিহত এবং ৯০৮ জন আহত হয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে। ৪১টি জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক এবং ১১টি অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও জানান, ঈদযাত্রা শুরুর দিন (৬ আগস্ট) থেকে ঈদ শেষে বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফেরার দিন (১৭ আগস্ট) পর্যন্ত মোট ১২ দিনের যাতায়াতে শুধু দেশের সড়ক-মহাসড়কে ২০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২২৪ জন নিহত ও ৮৬৬ জন আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বিগত ঈদের চেয়ে এবার রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভালো ছিল। নৌপথে বেশকিছু নতুন লঞ্চ যুক্ত হয়েছে, রেলপথেও বেশ কয়েক জোড়া নতুন রেল-বগি সংযুক্ত হয়। কিন্তু অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য, যানজটের ভোগান্তি, রেলপথের শিডিউল বিপর্যয়, টিকিট কালোবাজারি, ফেরি পারাপারের ভোগান্তিসহ নানা কারণে যাত্রীরা হয়রানির শিকার হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানো, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী বহন, পণ্যবাহী যানবাহন বন্ধের নিষেধাজ্ঞা অমান্য, অদক্ষ চালক ও হেলপার দ্বারা যানবাহন চালানো, বিরামহীনভাবে যানবাহন চালানো, মহাসড়কে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, নসিমন-করিমন ও মোটরসাইকেল অবাধে চলাচল, সড়ক-মহাসড়কে ফুটপাত না থাকা এবং ঈদফেরত যাতায়াতে মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায়ই এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে।
দুর্ঘটনা রোধে ১২টি সুপারিশমালাও তুলে ধরেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এগুলো হচ্ছে চালক প্রশিক্ষণ, লাইসেন্স ইস্যু পদ্ধতি আধুনিকায়ন, যানবাহনের ফিটনেস প্রদান পদ্ধতি আধুনিকায়ন, রাস্তায় ফুটপাত-ওভারপাস-আন্ডারপাস নির্মাণ ও জেব্রা ক্রসিং অঙ্কন করা, জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলকে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা, চালক প্রশিক্ষণের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ, ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা, ওভারলোড নিয়ন্ত্রণে মানসম্মত পর্যাপ্ত গণপরিবহনের ব্যবস্থা, মহাসড়কে ধীরগতি ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা আলাদা লেনের ব্যবস্থা, মোটরসাইকেলের ঈদযাত্রা নিষিদ্ধ করা, ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চলাচল বন্ধের আদেশ শতভাগ কার্যকর করা, সড়ক নিরাপত্তায় এরই মধ্যে যেসব সুপারিশ প্রণয়ন করা হয়েছে তার দ্রুত বাস্তবায়ন করা, ঈদের আগের মতো ঈদের পরও মহাসড়কে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার রাখা।
, চালক-শ্রমিকদের যুগোপযোগী বেতন-বোনাস ও কর্মঘণ্টা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিশ্রামের ব্যবস্থা রাখা এবং যানবাহনের যাত্রার আগে ত্রুটি পরীক্ষা করা।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সহসভাপতি তাওহিদুল হক লিটন এবং বিআরটিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি
ঈদযাত্রায় ২৪৪ দুর্ঘটনা নিহত ২৫৩
