নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে রাজধানীতে ফিরছেন মানুষ। তবে ঢাকায় পুরোদমে এখনও ফিরছেন না মানুষ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের ছুটি শেষ হলেও ঢাকায় ফেরা মানুষের চাপ থাকবে শুক্র ও শনিবার। তবে গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল গাবতলী এলাকা ঘুরে ঢাকামুখী মানুষের চাপ দেখা যায়নি।
বরিশাল থেকে বাসে চড়ে রাজধানীতে ফেরা আরমান হোসেন বলেন, ‘বেসরকারি চাকরি করি। বাড়তি ছুটি কাটানোর সুযোগ কম। তাই ঈদ শেষেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফিরে এসেছি।’ আরও দুদিন গ্রামে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে থাকতে পারলে ভালো লাগত।
ইন্টেরিয়র মিস্ত্রি সাহেদ হাওলাদার। আরিচা ঘাট থেকে গাবতলী এসেছেন। যাবেন যাত্রাবাড়ী। তিনি বলেন, পাঁচ দিনের জন্য বাড়ি ছিলাম। ঈদের ছুটি মোটামুটি ভালোই কাটিয়েছি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। আমি ইন্টেরিয়রের মিস্ত্রি। কাজে যোগ দেয়ার জন্যই আবার রাজধানীতে ফিরে এলাম।
হানিফ এন্টারপ্রাইজের গাবতলীর কাউন্টার মাস্টার মো. কবির বলেন, ‘গতকাল রাজধানীতে ফেরা যাত্রীদের তেমন চাপ নেই। এবারের ঈদে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের চাপও কম ছিল। শুক্র ও শনিবার ঢাকা ফেরা যাত্রীদের ভিড় হতে পারে।
এর আগে গত ২৯ এপ্রিল থেকে ঈদের ছুটি শুরু হয়। ছয় দিনের ছুটি শেষে হয় গত বুধবার (৪ মে)।
এদিকে ঈদের তৃতীয় দিন রাজধানীর সদরঘাট নৌ-টার্মিনালে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে ফিরতি মানুষের। সরেজমিন সদরঘাট এলাকায় দেখা যায়, শনিবার সকাল থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী, চাঁদপুরসহ সব নৌরুটের লঞ্চগুলো একে একে যাত্রী নিয়ে ঘাটে ভিড়ছে। অনেকে ঘাটে নেমে সরাসরি রওনা করেছেন কর্মস্থলে যোগ দিতে। কালবৈশাখী নিয়ে আতঙ্ক থাকলেও তেমন পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় নিরাপদে ফিরতে পেরে আনন্দিত যাত্রীরা। তবে সড়ক পথে এবার কম দুর্ভোগ হওয়ায় অন্যান্য বছরের ঈদের সময়ের তুলনায় যাত্রী কম বলে জানিয়েছেন লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা।
ভোলা থেকে আসা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটিয়ে আবার ঢাকায় ফিরলাম। আসতে তেমন কোনো ভোগান্তি হয়নি। ঝড় নিয়ে আতঙ্ক ছিল, কী হয় না হয়। আলহামদুলিল্লাহ, ভালোভাবে পৌঁছে গেছি।’
সুন্দরবন লঞ্চের স্টাফ সবুজ বলেন, ‘যাত্রীর চাপ কম। অন্য ঈদে এ সময় আরও যাত্রী থাকত। সড়কপথে যানজট কম হয়েছে, এবার অনেকেই তাই বাসে করে ফিরছেন। তবে কাল-পরশু ঘাটে বেশি ভিড় হবে।’
ফিরতি মানুষের পাশাপাশি আজও ঢাকা ছাড়তে সদরঘাটে এসেছেন অনেকে। যারা আগে ছুটি পাননি বা ঈদের আগে ভ্রমণের ঝক্কি এড়াতে চেয়েছিলেন, তারা এখন ঢাকা ছাড়ছেন। বিশেষ করে চাঁদপুর, শরীয়তপুর, মুলাদী, চরফ্যাসন, হাতিয়াসহ কয়েকটি রুটের লঞ্চে ভিড় দেখা গেছে ঘরমুখো মানুষের।
রাজধানীর উত্তরা থেকে এসেছেন চাঁদপুরগামী ফয়েজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দোকানে কাজ করি, মালিক ছুটি দেননি, তাই ঈদের দুদিন পর বাড়ি যাচ্ছি। প্রতি ঈদেই এমন সময় যাওয়া হয়। এ সময় যাত্রীর চাপ কম থাকে, সুন্দরভাবে যাওয়া যায়।’
সদরঘাট নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম আলী সরদার বলেন, ‘সকাল থেকেই ঘাটে লঞ্চ আসতে শুরু করেছে, কিছু লঞ্চ ছেড়েও গেছে। মানুষের চাপ ততটা নেই। পুলিশ বাহিনী সার্বক্ষণিক সতর্ক আছে। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে, এখনও পর্যন্ত তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’
