রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যোগাযোগের অন্যতম নৌপথ
শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুট। ঈদযাত্রায় ঘরমুখো এসব মানুষের জন্য প্রস্তুত শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুট। তাদের যাতায়াত নিরবচ্ছিন্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
ঈদ মৌসুমে এ নৌরুটে ঢল নামে ঘরমুখো মানুষের। নাড়ির টানে ঘরে ফেরা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের একটি বৃহৎ অংশ শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুট ব্যবহার করে ঘরে ফেরে।
প্রতিবছরই ঈদ মৌসুমে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্নে ঘরে ফেরা নিশ্চিত করতে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ঘাটে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে থাকে কর্তৃপক্ষ। আসন্ন ঈদুল ফিতর সামনে রেখে এ নৌরুটে ১৮টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ ও দু’শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করবে বলে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্র জানিয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্রে জানা যায়, ঈদের চাপ সামলাতে নৌরুটে ১৮টি ফেরি চলাচল করবে। বর্তমানে নৌরুটে ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। ২৬ রোজার দিকে আরও দুটি ফেরি যোগ হওয়ার কথা রয়েছে।
বর্তমানে এ নৌরুটে বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর, এনায়েতপুরী ও শাহ পরাণ নামের তিনটি রোরো ফেরি, ল্যান্টিন, টাপলো, রামশ্রী, রানীগঞ্জ, রানীক্ষেত ও রায়পুরা নামের ছয়টি ফ্ল্যাট ফেরি, কাকলী, কামিনী, ক্যামেলিয়া ও কপোতী নামের চারটি কে-টাইপ ফেরি এবং ফরিদপুর, কুমিল্লা ও কর্ণফুলী নামের তিনটি মিডিয়ামসহ মোট ১৬ ফেরি চলাচল করছে।
শিমুলিয়া ফেরিঘাটের বিআইডব্লিউটিসি’র ম্যানেজার আবদুল আলিম বলেন, ঈদ সামনে রেখে পর্যাপ্ত ফেরি রয়েছে। তাছাড়া নৌরুটে বর্তমানে নাব্য সংকট অনেকটাই কেটে গেছে। ফলে ফেরি চলাচলে এবার ভোগান্তি হবে না। তিনি আরও বলেন, ঈদে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ থাকে। এ সময় দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্য লোকাল বাসগুলো ফেরিঘাটের কাছে চলে আসে। এতে করে পরিবহন ওঠা-নামার পথে যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে ফেরি থেকে পরিবহন আনলোডে আমাদের কিছুটা সমস্যা হয়। এবারে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করা হবে, যাতে নির্বিঘ্নে ফেরি থেকে পরিবহন আনলোড করা যায়।
বছরের অন্য সময়ের চেয়ে ঈদে যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায়। ঘরে ফেরা মানুষের একটি বড় অংশ পদ্মা পার হয় লঞ্চে করে। ফলে এ সময়টায় নৌপথে ভিড় থাকে প্রচণ্ড। লঞ্চগুলোর ব্যস্ততার কমতি থাকে না। যাত্রীদের নির্বিঘ্নে পারাপার করতে প্রতিবছরই ঈদ মৌসুমে লঞ্চগুলোকে ত্রুটিমুক্ত রাখার চেষ্টা করা হয়। সারা বছর চলাচলের পর ঈদের আগেই সব লঞ্চ সার্ভে করা হয়। ঝালাই-মেরামতসহ ইঞ্জিন, সিট, ডেক ঠিক করা ও রঙ করা হয়ে থাকে।
৮৭টি লঞ্চ ঈদ মৌসুমে যাত্রীদের পারাপারে ব্যবহৃত হবে। ত্রুটিপূর্ণ ১০টি লঞ্চ মেরামতের জন্য ডকইয়ার্ডে রয়েছে। এগুলোও যথাসময়ে নৌরুটে যুক্ত হবে।
একাধিক লঞ্চ মালিক বলেন, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে লঞ্চ চলাচল শৃঙ্খলার সঙ্গে হয়ে আসছে। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা হয় না। তাছাড়া সব লঞ্চে জীবন রক্ষাকারী বয়া ও লাইফ জ্যাকেট রয়েছে।
শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী উভয় ঘাট মিলিয়ে এ নৌরুটে দু’শতাধিক স্পিডবোট রয়েছে। ঈদ মৌসুমে যাত্রী পারাপারে নিয়োজিত থাকবে স্পিডবোটগুলো।
কোনো দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, সে লক্ষ্যে লঞ্চঘাটে কঠোর নজরদারি থাকবে বলে বিআইডব্লিউটিসি’র ম্যানেজার আবদুল আলিম জানিয়েছেন।
শেখ মোহাম্মদ রতন