সামান্য প্রয়াসই গড়ে তুলতে পারে কয়েকশ বছরের সংগ্রহশালা। প্রতিষ্ঠিত হতে পারে বিশাল জাদুঘর। এজন্য প্রয়োজন ধৈর্য, সাহস, ত্যাগ ও আর্থিক সংহতি। এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এসএম আব্রাহাম লিংকন ও নাজমুন নাহার দম্পতি।
কুড়িগ্রাম আইন কলেজের অধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন (পিপি)। তার সহধর্মিণী মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা নাজমুন নাহার। তারা নিজেদের বাসভবনকে জাদুঘরের রূপ দিয়েছেন।
শিক্ষক দম্পতির প্রতিষ্ঠিত জাদুঘরের নাম ‘উত্তরবঙ্গ জাদুঘর’। নতুন শহরে অবস্থিত তাদের দ্বিতল আটটি কক্ষ, ছয়টি বেলকনিবিশিষ্ট বাসভবনে সাজানো রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস ও আঞ্চলিক ঐতিহ্যের নানা নিদর্শন। তারা বাসভবনটি শুধু রাতে ঘুমানোর জন্য ব্যবহার করছেন। আর বাকি সময় উš§ুক্ত করে দেওয়া হয়েছে দর্শনার্থীদের দেখার জন্য। জাদুঘরটি ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও দর্শনার্থীদের জন্য উš§ুক্ত করা হয়েছে ২০১৫ সালে।
উত্তরবঙ্গ জাদুঘরে স্থান পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংবলিত গৌরবের তথ্যউপাত্ত, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির দলিলদস্তাবেজ, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের জীবনীর কিছু সংগ্রহ, কয়েক শতাব্দীর রাজা, জমিদার ও সুলতানি আমলের পুরাকীর্তি, বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, দেশবরেণ্য ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী ও ছায়ালিপিসহ আড়াই হাজার সংগ্রহ।
একান্ত সাক্ষাৎকারে জানা যায়, আব্রাহাম লিংকন শিশুকাল হতেই চিন্তাশীল সংগ্রহকামী ব্যক্তি ছিলেন। শিশুকালে ডাকটিকিট সংগ্রহের মাধ্যমে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটে। শিক্ষক দম্পতির আয়ের উল্লেখযোগ্য অংশ এ জাদুঘরের পেছনে ব্যয় করা হয়। দর্শনার্থীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হয় না। তাদের একমাত্র ছেলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
১৯৯২ সালে আইন কলেজ প্রতিষ্ঠা করে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছেন লিংকন। আজ পর্যন্ত এ কলেজ হতে কোনো বেতন-ভাতা নেননি তিনি। এছাড়া জেলা আইনজীবী সমিতিতে আট বছরের কিছু সময় সভাপতি ও কিছু সময় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। লেখক ও গবেষক হিসেবেও পরিচিত তিনি।
আমানুর রহমান খোকন, কুড়িগ্রাম