Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 5:49 pm

উত্তরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি মধ্যাঞ্চলে অবনতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: উজানের পানি কমতে থাকায় দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও মধ্যাঞ্চলে অবনতি হয়েছে। চলমান বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৮ জেলার ৯২ উপজেলার ৫৩৫টি ইউনিয়ন দুর্গত হয়েছে; সরকারি হিসাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সোয়া ২২ লাখ মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা সতর্কীকরণ ও পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশের নদ-নদীর ১০১টি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৪৪টি পয়েন্টেই শুক্রবার পানি বেড়েছে। এর মধ্যে বিপদসীমার ওপরে বয়ে যাচ্ছে ২২টি পয়েন্টে। ৫৭টি স্টেশনে পানি কমতে শুরু করেছে।

এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় ধরলা, ঘাগট, ব্রহ্মপুত্র ও গুড় নদীর পানি চারটি পয়েন্টে এবং যমুনা নদীর পানি দুটি পয়েন্টে কমেছে। মেঘনা অববাহিকার সুরমা, কুশিয়ারা ও পুরোনো সুরমার পানি তিনটি পয়েন্টে এবং গঙ্গা অববাহিকার নদী আত্রাইয়ের পানি একটি পয়েন্টে কমে এসেছে। এর ফলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, নাটোর, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের বন্যার পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টা তা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভুইয়া।

তবে ভাটির দিকে পানির চাপ বাড়ায় দেশের মধ্যাঞ্চল মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী ও ঢাকা জেলার নিন্মাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে বলে জানান তিনি। সুরমা নদীতে পানি কমলেও এখনও জলাবদ্ধতা রয়েছে ছাতকে। উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ ইউনিয়নে জলাবদ্ধতার কারণে চলাচলের বাহন শুধু নৌকা। আরিফুজ্জামান বলেন, গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকার নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ার প্রবণতা আগামী দুই দিন অব্যাহত থাকবে। পদ্মা নদী আগামী এক দিনের মধ্যে সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপদসীমা পেরিয়ে যেতে পারে।

চলতি মৌসুমে প্রথম দফার বন্যা শুরু হয় ২৭ জুন। পানি কমায় ৬-৭ জুলাই থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে। কিন্তু ভারী বর্ষণে ১১ জুলাই থেকে ফের নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করে এবং বন্যা বিস্তৃতি পায়। বন্যা সতর্কীকরণ ও পূর্বাভাস কেন্দ্র বলেছিল, দ্বিতীয় দফার এই বন্যা দেশের ২৩টি জেলায় বিস্তৃত হতে পারে, স্থায়িত্ব হতে পারে দুই সপ্তাহ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানিয়েছেন, বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ১২ জেলায় এক হাজার ৫৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে ২০ হাজার ৭০৫ মানুষ এবং ৫৬ হাজার ৩১টি গবাদিপশু আশ্রয় পেয়েছে। ৫৯৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হলেও এর মধ্যে ১৯৭টি টিম দুর্গত এলাকায় কাজ করছে। কভিড-১৯ মহামারির মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।