নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে শ্যামপুর সুগার মিলসের শেয়ারদরে অস্বাভাবিক উত্থান ঘটে। দুই মাসের (সেপ্টেম্বর-নভেম্বর) ব্যবধানে শেয়ারদর বাড়ে ১৪৪ টাকা বা ১৫৬ শতাংশ। এমন অস্বাভাবিক উত্থানে নীরব ভূমিকায় দেখা যায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইকে। তবে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদরে পতন শুরু হয়। কোম্পানির শেয়ারদর পতনকালে সেপ্টেম্বর-পরবর্তী উত্থান তদন্তের নির্দেশ দিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ( বিএসইসি)।
ডিএসই তথ্যে দেখা যায়, কোম্পানিটির শেয়ার গত ১৭ সেপ্টেম্বর ছিল ৯২ টাকা। বাড়তে থাকা শেয়ার গত ১১ নভেম্বর দাঁড়ায় ২৩৬ টাকায়। বেড়েছে ১৪৪ টাকা বা ১৫৬ শতাংশ। এর পর থেকে ধারাবাহিকভাবে পতন ঘটছে কোম্পানির শেয়ারের। সর্বশেষ গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ১৭৯ টাকা ৭০ পয়সা।
গতকাল রোববার বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করা হয়। ২০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য বলা হয়।
বিএসইসি’র চিঠিতে বলা হয়, শ্যামপুর সুগার মিলসের শেয়ারদর গত ১৭ সেপ্টেম্বর ৯২ টাকা ছিল, যা বৃদ্ধি পেয়ে ২৬ অক্টোবর ১৫৬ টাকা ২০ পয়সা হয়। শেয়ারমূল্যের অস্বাভাবিক গতিবিধির জন্য ওই কোম্পানিটির সাম্প্রতিক সময়ের লেনদেনের ওপর তদন্ত করে ২০ কার্যদিবসের মধ্যে বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানাতে হবে।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, কোম্পানির লেনদেন সন্দেহজনক হলে পর্যবেক্ষণে রাখে বিএসইসি। পর্যবেক্ষণ-পরবর্তীকালে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়েছে কি না, তা-ই জানতে চাওয়া হয়।
এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে চারবার (১৮, ২৪, ২৫ ও ২৬ তারিখ) শেয়ারদর বাড়ার কারণ জানতে চায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। শেয়ারদর বাড়ার সুনির্দিষ্ট কারণ নেই বলে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
শ্যামপুর সুগার মিলসের সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি ২০২৩-২৪ হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শ্যামপুর সুগার মিলসের শেয়ারপ্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে ১০ টাকা ৬৮ পয়সা। আগের হিসাববছরের একই প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ১৯ টাকা ৩০ পয়সা। গত ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি শ্যামপুর সুগার মিলস।
১৯৯৬ সালে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে লেনদেন করলেও কয়েক মাস ধরেই শেয়ারদর বেড়েই চলছে। ৫০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন হলো পাঁচ কোটি টাকা। শ্যামপুর সুগার মিলসের ৫১ শতাংশ সরকারের হাতে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।