নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গতকাল বৃহস্পতিবারে সূচকের নামমাত্র উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। এদিন পুঁজিবাজারের সব সূচক বেড়েছে। তবে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কমে ৩০০ কোটিতে নেমে এসেছে, যা গত আড়াই বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ। সেই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল।
গতকাল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচক বৃদ্ধিতে বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে উঠে এসেছে পাট খাতের শেয়ার। ফলে আলোচিত খাতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এর আগের দুই কার্যদিবসে খাতটিতে শেয়ারদর কমেছিল। এরপর দর বৃদ্ধির দিক থেকে গতকাল দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ খাত। গতকাল দর বৃদ্ধির দিক থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে যথাক্রমে ছিল আইটি এবং কাগজ ও মুদ্রণ খাতের শেয়ার।
এদিকে গতকাল টেলিকমিউনিকেশন, আর্থিক, বিবিধ, প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন, সিমেন্ট এবং মিউচুয়াল ফান্ড খাতের শেয়ারদর কমা বা বৃদ্ধির কোনো পরিবর্তন হয়নি। এছাড়া বাকি সব খাতে শেয়ারদরে পতন হয়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল আগ্রহ বেশি থাকা পাট খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৩টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া সব শেয়ারের দাম বেড়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভ্রমণ খাতে দর বেড়েছে ২ দশমিক ৮০ শতাংশ। খাতটিতে মোট ৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২টির শেয়ারদর বেড়েছে এবং বাকি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। ১ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল আইটি খাত। খাতটিতে গতকাল মোট ১১টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৬টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে এবং ৩টি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। গতকাল চতুর্থ স্থানে থাকা কাগজ খাতের শেয়ারদর কমেছে ১ শতাংশ। এ খাতে লেনদেন হওয়া ৬টি কোম্পানির মধ্যে ৪টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে এবং ২টি অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে গতকাল শেয়ারদর কমেছে ট্যানারি খাতে। এ খাতে গতকাল ২ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। খাতটিতে গতকাল মোট ৬টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১টির দর বেড়েছে এবং বাকি কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর কমেছে। গতকাল দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ারদর কমে সিরামিক খাত দ্বিতীয় স্থানে ছিল। শেয়ারদর কমার দিক থেকে গতকাল তৃতীয় স্থানে ছিল ব্যাংক খাত। খাতটিতে দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর কমে গতকাল চতুর্থ স্থানে ছিল বস্ত্র খাতের শেয়ার।
অন্যদিকে গতকাল সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ খাতে। খাতটিতে গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৮ দশমিক ৫০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রকৌশল খাতে গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ১০ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হওয়া ভ্রমণ খাত রয়েছে তৃতীয় স্থানে। গতকাল চতুর্থ স্থানে থাকা আইটি খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ২০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইতে ২২৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা গত আড়াই বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ লেনদেন। এর আগে ২০২০ সালের ১৬ জুলাই গতকালের থেকে কম লেনদেন হয়েছিল। ওই দিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২২৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকার।
গতকাল ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২০২ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৫৭ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে। ডিএসইতে গতকাল ৩০৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫২টির, কমেছে ১০১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫৬টির।
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ও সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল সিএসই সার্বিক সূচক সিএসপিআই পয়েন্ট কমেছে। এদিন সিএসইতে ২০ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।