নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার পর সূচকের বড় উত্থান-পতন ঘটে। এই সময়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক গত ১৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছায়। আবার প্রথম কার্যদিবসে সূচকের বড় পতন ঘটে। সূচকের উত্থান-পতনের মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার ২০ কার্যদিবস পর সূচক আগের অবস্থানে ফিরে এসেছে। তাই পরবর্তী বাজার পরিস্থিতির ওপর পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা অনেকাংশই নির্ভর করছে বলে মনে করছে বাজার-সংশ্লিষ্টরা।
ডিএসইর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ১৮ জানুয়ারি ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের প্রথম সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিনে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান ছিল ৬৩৩৬ পয়েন্টে। সূচকের উত্থান-পতনের মধ্যে গত ২০ কার্যদিবসের ১২ কার্যদিবসে সূচকের উত্থান এবং ৮ কার্যদিবসে সূচকের পতন ঘটে। এর মধ্যে ১২ কার্যদিবসে সূচক বেড়েছে ৪০৪ পয়েন্ট আবার ৮ কার্যদিবসে সূচক কমেছে ৪০৪ পয়েন্ট। এতে করে ২০ কার্যদিবস শেষে সূচক ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার আগের অবস্থান ৬৩৩৬ পয়েন্টে ফিরে এসেছে।
বাজার-সংশ্লিষ্টরা জানান, ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার পর বাজারে নতুন বিনিয়োগকারী এসেছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও বাজার ভালো রাখতে সচেষ্ট ছিল। এতে করে বাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরে। তবে বাজারে নতুন আসা কোম্পানি বেস্ট হোল্ডিংয়ের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের বাড়তি আগ্রহ দেখা যায়। যার প্রভাব অন্য কোম্পানির শেয়ারের ওপর পড়েছে। এছাড়া বাজার থেকে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতাও রয়েছে। এতে করে গেল কয়েক দিন বাজারে সূচক কমার পাশাপাশি অধিকাংশ শেয়ারের দরপতন হয়েছে। তাই পরবর্তী বাজার পরিস্থিতির ওপর পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা অনেকাংশই নির্ভর করছে।
ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার পরবর্তী বাজার প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের শিক্ষক ড. আল-আমীন শেয়ার বিজকে বলেন, বাজারে বেশ কিছু কোম্পানি সূচক থেকে বাদ পড়েছে। এর পরও বাজার সূচকের মিশ্র প্রবণতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে শেষ কয়েক দিনের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এক্ষেত্রে দুটি বিষয় কাজ করতে পারেÑতাহলো বাজার থেকে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা। অন্যটি বাজার থেকে অর্থ তুলে নেয়ার প্রবণতা। তবে অর্থ তুলে নেয়া হলে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
পুঁজিবাজারে দরপতন ঠেকাতে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য স্তর বা ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বিএসইসি। দেড় বছর ধরে পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস ব্যবস্থা আরোপিত ছিল। তাতে পুঁজিবাজারে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে আসে। কমে যায় লেনদেন। এমন এক পরিস্থিতিতে গত ২১ জানুয়ারি প্রথম দফায় ৩৫টি বাদে বাকি সব প্রতিষ্ঠানের ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়া হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৩ জানুয়ারি তুলে নেয়া হয় আরও ২৩ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস। সর্বশেষ ৬ ফেব্রুয়ারি আরও ছয় কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়া হয়। আর ছয়টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি সেগুলো হলোÑবেক্সিমকো লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার, বিএসআরএম লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও শাহজিবাজার পাওয়ার।