উদ্বেগ এক ধরনের মানসিক সমস্যা। জীবনে উদ্বেগ থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যায় ভুগলে বুঝতে হবে, আপনি মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সঠিক চিকিৎসার অভাবে এটি জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
উদ্বেগ যেকোনো ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যকে করতে পারে ক্ষতিগ্রস্ত, যার প্রভাব পড়তে পারে শরীরেও। সমস্যাগুলো এত জোরালো যে এর প্রভাব পড়ে সামাজিক জীবনেও। শৈশব, কৈশোর বা প্রাপ্তবয়স জীবনের যেকোনো পর্যায়ে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। নানা কারণে উদ্বেগ বাড়তে পারে। বিভিন্ন রোগও এজন্য দায়ী। দেখে নিতে পারেন এমন কয়েকটি কারণ
অ্যাজমা
অ্যাজমার কারণে উদ্বেগ হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যাজমার ফলে যে শ্বাসকষ্ট হয়, তাতে উদ্বেগ বাড়ার সম্পর্ক রয়েছে।
থাইরয়েড
থাইরয়েডের মাত্রা বেড়ে গেলে হৃৎস্পন্দন বাড়তে পারে। ওজন কমতে শুরু করে। এতে উদ্বেগ বাড়ে। অতিরিক্ত উদ্বেগের ফলে রোগী আরও অসুস্থ হয়ে যায়। তাই উদ্বেগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
হৃদরোগ
কানাডার সেন্ট জোসেফ হেলথকেয়ারের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট রান্ডি ই ম্যাককাবে বলেন, বুকে ব্যথা ও অনিয়মিত হৃৎস্পন্দনের কারণে উদ্বেগ বাড়তে পারে। তাই নিঃশ্বাসে সমস্যা বা বুকে ব্যথা হলে দেরি না করে শরণাপন্ন হতে হবে চিকিৎসকের।
কম ঘুম
কম ঘুমের কারণে মানসিক চাপের পাশাপাশি উদ্বেগের ঝুঁকিও বাড়তে পারে। দেখা যায়, মাঝরাতে কোনো কারণ ছাড়াই ঘুম ভেঙে যাচ্ছে, কিংবা রাতে ঘুম হচ্ছে না। এসব দুশ্চিন্তায় শুরু হয়ে যায় উদ্বেগ।
ডায়াবেটিস
রক্তে শর্করার মাত্রা কম বা বেশি হলেও বাড়তে পারে উদ্বেগ। যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা ডাক্তার ড. ম্যাকক্যাবে বলেন, ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের অধিকাংশই উদ্বেগজনিত নানা সমস্যায় ভুগে থাকেন।
পেটের সমস্যা
পেটে যেকোনো সমস্যার সঙ্গে উদ্বেগ জড়িত। জানিয়েছেন সুইডেনের কয়েকজন গবেষক। তার বলেছেন, বাইরে বের হলে সহজেই টয়লেট খুঁজে পাওয়া যাবে কি না, এ নিয়েও দুশ্চিন্তায় ভোগেন অনেকে।
নার্ভের সমস্যা
ব্রেন টিউমার বা এপিলেপ্সির মতো রোগের কারণেও উদ্বিগ্ন হতে পারেন। এমনকি চিকিৎসকরা নার্ভ-সম্পর্কিত কোনো রোগ শনাক্ত করার অনেক আগে থেকেই রোগীর মধ্যে এ মানসিক চাপ দেখতে পান।
রক্তস্বল্পতা
লোহিত রক্তকণিকা শরীরের পেশিতে অক্সিজেন সরবরাহ করে। আর এ রক্তকণিকা কমে গেলে বা সেল ঠিকমতো কাজ না করলে শরীর হয়ে পড়তে পারে দুর্বল। অক্সিজেনের এ ঘাটতি কমাতে পালস বেড়ে যেতে পারে। ফলে বাড়ে উদ্বেগজনিত সমস্যা।
পুষ্টির ঘাটতি
জিঙ্ক শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ক্ষত সারিয়ে তোলা ও সাধারণ বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে সহায়তা করে। পাশাপাশি মস্তিষ্ককে শান্ত রাখতেও সহায়তা করে। গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে জিঙ্কের পরিমাণ কমে গেলে বেড়ে যায় উদ্বেগ।
অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার
গবেষণায় দেখা গেছে, এ ক্যানসারে আক্রান্ত অনেক রোগীর মধ্যে উদ্বেগ ও বিষন্নতা রয়েছে। এর কারণ অবশ্য জানা যায়নি। এ ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশ কম।
টিনিটাস
নার্ভের ত্রুটিজনিত রোগ টিনিটাস। এতে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে উদ্বেগ বাড়ে।