উদ্যোক্তাদের শেয়ার ব্যবসা বন্ধ না হলে বাজার ভালো হবে না

উদ্যোক্তাদের শেয়ার ব্যবসা বন্ধ না হলে বাজার ভালো হবে না

পুঁজিবাজারে বড় সমস্যা কোম্পানির উদ্যোক্তারা শেয়ার কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত হয়ে গেছে। ১৯৯৬, ২০১০ সালে যখনই শেয়ারের দাম বেড়েছে, তখনই স্পন্সর বা উদ্যোক্তারা ঘোষণা ছাড়াই শেয়ার বিক্রি করেছে। যা বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু স্পন্সর বা উদ্যোক্তাদের কাছে এককভাবে ন্যূনতম দুই শতাংশ ও সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকা উচিত। কিন্তু প্রায় ৫৩ শতাংশ কোম্পানির উদ্যোক্তা দুই থেকে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেন না। এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপও লক্ষ করা যায় না। যতক্ষণ পর্যন্ত উদ্যোক্তাদের শেয়ার ব্যবসা বন্ধ করা না যাবে, ততক্ষণ বাজার ভালো হওয়ার আশা করা যায় না। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি উঠে আসে। আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সভাপতি মো. রকিবুর রহমান এবং বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ, এফসিএ।
রকিবুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারে ভালো মানের শেয়ারের স্বল্পতা রয়েছে। গত ১০ বছরে বাজারে যতগুলো কোম্পানি এসেছে, সেসব কোম্পানির ৬০ শতাংশের শেয়ারদর ফেসভ্যালুর নিচে রয়েছে। বিশ্বের যে কোনো দেশে যখন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়, তখন মানি মার্কেট এবং বিশেষ করে পুঁজিবাজারে হাজারো বিনিয়োগকারী অধীর আগ্রহে থাকেন কী ধরনের প্রণোদনা তাদের জন্য আসছে অথবা কোনো নেতিবাচক খবর আসছে কি না, যা মানি মার্কেট ও পুঁজিবাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বা বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হবে। পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েÑএমন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে বিশ্বের কোথায়ও দেখা যায় না। অথচ দেশে যখন মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় আসে, তখন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়। মুদ্রানীতি ঘোষণায় বাজারে কি প্রভাব পড়ে? ভয়ে মুদ্রানীতি ঘোষণার আগেই বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দেন। অর্থাৎ মুদ্রানীতিতে এমন কিছু থাকবে, যা বাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, যা বিগত কয়েক বছরের মুদ্রানীতি ঘোষণায় দেখা গেছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের পুঁজিবাজারের বড় সমস্যা হচ্ছে কোম্পানির স্পন্সর বা উদ্যোক্তারা শেয়ার কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত হয়ে গেছে। এতে বোঝা যায়, উদ্যোক্তারা শেয়ার ব্যবসা করতে পছন্দ করেন। ১৯৯৬, ২০১০ সালে যখন শেয়ারের দাম বেড়েছে, তখনই স্পন্সর বা উদ্যোক্তারা ঘোষণা ছাড়াই শেয়ার বিক্রি করেছেন। যা বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে। কিন্ত স্পন্সর বা উদ্যোক্তাদের কাছে ন্যূনতম দুই শতাংশ ও সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকা উচিত। কিন্তু বাজারের প্রায় ৫৩ শতাংশ কোম্পানির উদ্যোক্তাদের দুই থেকে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেন না। এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করা যায় না। যতক্ষণ পর্যন্ত উদ্যোক্তাদের শেয়ার ব্যবসা বন্ধ করা না যাবে, ততক্ষণ বাজার ভালো হওয়ার আশা করা যায় না।
ড. জামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমান সরকার গঠিত হওয়ার পর এ প্রথম অর্থমন্ত্রী ও বিভিন্ন খাতের বেসরকারি উপদেষ্টার সমন্বয়ে দেশের সব খাতের ব্যবসায়ীকে নিয়ে বসেছিলেন। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তবে আরও যেসব নিয়ন্ত্রক সংস্থা রয়েছে, তাদেরও আমন্ত্রণ জানানো উচিত ছিল। বিশেষ করে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, আইসিএবি ও আইসিএমএ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান। তবে এ বৈঠক বছরে একবার না করে আরও কয়েকবার করা যেতে পারে। এতে করে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বেরিয়ে আসবে এবং দ্রুত সমাধান হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএসইসি, ইন্স্যুরেন্স ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ আরও যেসব নিয়ন্ত্রক সংস্থা রয়েছে, এদের সমন্বয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে সভা হতো। কিন্তু গত তিন থেকে চার বছরে এ ধরনের সভা হয়নি। যদি এটি চালু হয়, তাহলে বিএসইসি, বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে, সেটি দূর হবে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০