উন্নয়নে দক্ষ মানবসম্পদের বিকল্প নেই। এজন্য শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন প্রয়োজন। তাই কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবনে ২০২০ সালের মধ্যে এতে ভর্তির হার দ্বিগুণের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে সরকারি পলিটেকনিকগুলোতে দ্বিগুণ করা হয়েছে এর আসন। পাশাপাশি ৬৪টি টিচার্স ট্রেনিং কলেজকে পলিটেকনিক কলেজে উন্নীত করা হয়েছে। এ অবস্থায় গতকাল শেয়ার বিজে প্রকাশিত ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে: শিল্পমন্ত্রী’ শিরোনামে খবরটি অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকবে। এতে বলা হয়, উন্নত দেশগুলোয় যেখানে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত, সেখানে এদেশে এর সংখ্যা মাত্র ১০ শতাংশ। তাই সরকার এ শিক্ষার ওপর জোর দিচ্ছে বলে জানা যায়।
দেশের সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এটি চাকরিবান্ধব নয় বলে অভিযোগ অনেকের। স্কুল-কলেজ, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন অনেকের মনে। এর মানে অবনতির কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেন শিক্ষক নিয়োগসহ অন্যান্য প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির ছড়াছড়িকে। দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে প্রতিবছর ‘এ’ প্লাস ও পাসের হার। কিন্তু শিক্ষার মানের উন্নয়ন হচ্ছে না। প্রমাণ হিসেবে দেখা গেছে, এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিপরীক্ষায় দু-একটি বিষয়ে যোগ্য প্রার্থীর সংকট। এটা শিক্ষাব্যবস্থার জন্য হতাশাজনক।
বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মানও সন্তোষজনক নয় বলে জানা গেছে। সারা দেশে দ্রুত গজিয়ে ওঠা বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সিংহভাগের জমি স্বল্পতা, শিক্ষক ও ল্যাব সংকট এসব দেখে প্রতিষ্ঠানগুলোর মান সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়। অনেকের অভিযোগ, কোনো কোনো বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান এমনই যে, নির্ধারিত সময়ের পরে শিক্ষার্থীরা সনদ পেলেও প্রকৃতপক্ষে ওই শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জিত হয় না।
দেশ-বিদেশের পরিবর্তিত চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কারিগরি শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি
বিদেশি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন খাতে দক্ষতা প্রদর্শনে সক্ষম হয়। কারিগরি জ্ঞান অর্জনের পর সনদপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা যাতে চাকরি পায়, তাও ভাবা দরকার।
কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ কম বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থায় অভাব রয়েছে দক্ষ
প্রশিক্ষকের। এজন্য তাদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা
করা যেতে পারে। এ খাতের বিকাশে সংশ্লিষ্টরা আরও গুরুত্ব দেবেন এমনটাই আশা।