Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 12:08 pm

উন্নয়নের স্তুতিতে আড়াল অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ

ইসমাইল আলী: মূল্যস্ফীতি বর্তমানে ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। বাজার ব্যবস্থায় শৃঙ্খলার অভাব, টাকার অবমূল্যায়ন, অস্থিতিশীল বৈদেশিক মুদ্রার বাজার, কমছে রিজার্ভ। প্রবৃদ্ধির ধারা ক্রমহ্রাসমান, অর্থনৈতিক সূচকগুলোর সবই নিম্নমুখী। এতসব সমস্যার কার্যকর সমাধান নেই অর্থমন্ত্রীর কাছে। যদিও স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদে এসব সূচক ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সব বাধা কাটিয়ে স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার এবং সর্বোপরি অর্থনীতির সুফল দেশের সর্বশেষ প্রান্তে থাকা নাগরিকের কাছেও পৌঁছে যাবে বলেই তার মন্তব্য।

এমনই বিলাসী স্বপ্ন বুনে গেছেন গতকাল জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য উত্থাপিত বাজেটে। ‘টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা’ শীর্ষক ২১০ পৃষ্ঠার বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী সমস্যার চেয়ে সাফল্য আর সম্ভাবনার জয়গান বেশি গেয়েছেন। ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব ও দারিদ্র্য, ভঙ্গুর শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক খাত ও উচ্চমাত্রার ঋণখেলাপি, নুয়ে পড়া পুঁজিবাজার, সার্বিকভাবে দুর্বল অর্থনৈতিক সূচকগুলো সযত্নে তিনি এড়িয়ে গেছেন। অথচ নতুন দায়িত্ব নেয়ার পর এসব সমস্যা মোকাবিলাই ছিল তার জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

বাজেট বক্তব্যের শুরুর দিকে অর্থনীতির কিছু বিদ্যমান সমস্যা ও সামনের কিছু চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেছেন অর্থমন্ত্রী। তবে সেগুলোর কার্যকর সমাধানের পথ বাতলে না দিয়ে তিনি অনেকটা অ্যাডাম স্মিথের ‘অদৃশ্য হাত’-এর ওপর ভরসা করেছেন। সবকিছুই যেন সে অদৃশ্য হাত ঠিক করে অর্থনীতিকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনবে। এছাড়া এলডিসি থেকে উত্তরণসহ বৈশ্বিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সমাধানও তিনি অনেকটাই অদৃশ্যের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন।

উচ্চ মূল্যস্ফীতি: মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের এ বছরের এপ্রিল মাসের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী বৈশ্বিক গড় মূল্যস্ফীতি ২০২৭ সাল নাগাদ তিন দশমিক ৯ শতাংশে নেমে যাবে। তবে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি কমে আসার সাম্প্রতিক প্রবণতা সত্ত্বেও বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি এখনও ৯ শতাংশের ওপরে। দেশের বাজারে সরবরাহ শৃঙ্খলে ত্রুটি বাংলাদেশে এ উচ্চ মূল্যস্ফীতির একটি প্রধান কারণ। আরেকটি প্রধান কারণ হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার অবচিতি (অবমূল্যায়ন)।

যদিও মূল্যস্ফীতি দ্রুতই নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে বাজেট বক্তব্যে তুলে ধরেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে অন্যান্য দেশ কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশেও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অনুসরণ করা হচ্ছে এবং এর অংশ হিসেবে সুদের হার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত পদক্ষেপের সাফল্য নিশ্চিত করতে রাজস্ব নীতিতেও সহায়ক নীতিকৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। এসব নীতিকৌশলের ফলে আশা করছি আগামী অর্থবছর মূল্যস্ফীতি সাড়ে ছয় শতাংশে নেমে আসবে।’

রিজার্ভ ও বিনিময় হার: রিজার্ভ কমার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, কভিড-১৯ অতিমারির প্রকোপ কমার পর আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য দ্রুত বাড়তে থাকে। এতে ওই বছর বাণিজ্য ঘাটতি ৩৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়, যার ফলে রিজার্ভ ও বিনিময় হারের ওপর চাপ তৈরি হয়। গ্রস রিজার্ভ ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই শেষে ছিল ৩৯ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার, যা গত মাস শেষে ২৪ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। মুদ্রার বিনিময় হারকে স্থিতিশীল রাখতে গিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে এ পর্যন্ত রিজার্ভ থেকে প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলার বাজারে ছাড়তে হয়েছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই ২০২২ থেকে চলতি অর্থবছরের মে পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে টাকার প্রায় সাড়ে ২৫ শতাংশ অবচিতি ঘটেছে। এল ফলে আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে আমদানিকৃত পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সরাসরি প্রভাব পড়েছে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতিতে। যদিও বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করতে ক্রলিং পেগ পদ্ধতির ফলে দ্রুতই পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করছেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ক্রলিং পেগ পদ্ধতি প্রবর্তনের ফলে রপ্তানি উৎসাহিত হবে এবং অফিশিয়াল চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। আর্থিক হিসাবে এখনও ঘাটতি থাকলেও তা মধ্যমেয়াদে কমে আসবে এবং এর ফলে আগামীতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল হলে ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারেও স্থিতিশীলতা আসবে এবং তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির আওতায় যুগপৎভাবে কাজ করবে।

বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ: বৈদেশিক ঋণের সুদহার প্রসঙ্গে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট (সোফর) বিশ্বে সুদের হারের অন্যতম রেফারেন্স রেট হিসেবে ব্যবহƒত হচ্ছে। ২০২২ সালে জানুয়ারিতে এ হার ছিল শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সুদের হার বৃদ্ধির কারণে সোফরও বাড়তে থাকে। গত মাসে তা সাড়ে পাঁচ শতাংশে পৌঁছেছে। ইউরোপসহ অন্যান্য উন্নত দেশেও একই কারণে সুদের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইউরিবর, টোনার মতো রেফারেন্স রেটও বাড়ছে এজন্য।

বিশ্বে সুদের হার বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশকে দুই ধরনের চাপ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। উন্নত বিশ্বে সুদের হার বৃদ্ধির কারণে মূলধনের বহিঃপ্রবাহের (বিনিয়োগ চলে যাওয়া) গতি বৃদ্ধির পাশাপাশি আন্তঃপ্রবাহ (বিদেশি বিনিয়োগ আসা) কমার প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে একদিকে আর্থিক হিসাবে ঘাটতি বাড়ছে, অন্যদিকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের দায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছর বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদ এক বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় করতে হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোতে আগামীতে সুদের হার কমার পূর্বাভাস রয়েছে। এটি সঠিক না হলে আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। যদিও এ চ্যলেঞ্জ মোকাবিলার কোনো কর্মকৌশল অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তব্যে তুলে ধরেননি।

কর-জিডিপি অনুপাত: রাজস্ব আহরণের নিম্নমুখী প্রবৃদ্ধি নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারি ব্যয়-সক্ষমতা বৃদ্ধিতে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশ এদিক থেকে অনেক দেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত আট শতাংশের নিচে। ২০২২ সালের হিসাবে ভারতে এ হার ১৬ দশমিক ৯৮, ইন্দোনেশিয়ায় ১১ দশমিক ৫৯, ভিয়েতনামে ১৪ দশমিক ০৩ ও থাইল্যান্ডে ১৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ। মধ্যমেয়াদে বাংলাদেশের ১০ শতাংশের বেশি কর-জিডিপি অনুপাত অর্জন জরুরি বলে উল্লেখ করলেও তার কোনো কৌশল তিনি বাজেটে উল্লেখ করেননি। বরং অটোমেশন ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তা অর্জিত হবে বলে তিনি মনে করছেন।

জিডিপি প্রবৃদ্ধি: বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপ, দেশের অভ্যন্তরীণ উচ্চ মূল্যস্ফীতি সত্ত্বেও জিডিপি প্রবৃদ্ধির স্তুতি গেয়েছেন অর্থমন্ত্রী। বাজেট বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট এবং অন্যান্য বৈশ্বিক অস্থিরতা সত্ত্বেও ২০২১-২২ অর্থবছর বাংলাদেশ সাত দশমিক ১ শতাংশ, ২০২২-২৩ অর্থবছর পাঁচ দশমিক ৭৮ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছর সাময়িক হিসাবে পাঁচ দশমিক ৮২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা দেশের অর্থনীতির অন্তর্নিহিত শক্তির পরিচায়ক।

তিনি আরও বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধির এ গতি আগামীতে অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে কৃষি ও শিল্প খাতে যৌক্তিক সকল সহায়তা অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি অবকাঠামো প্রকল্পসমূহের যথাযথ বাস্তবায়ন এবং রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ কাক্সিক্ষত মাত্রায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে। এসব প্রাজ্ঞ নীতি-কৌশলের সুফল হিসেবে আগামী অর্থবছর ছয় দশমিক ৭৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে এবং মধ্যমেয়াদে তা বৃদ্ধি পেয়ে সোয়া সাত শতাংশে পৌঁছাবে।

এলডিসি থেকে উত্তরণ: ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর রপ্তানি শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা হ্রাস পাবে, রপ্তানি নগদ সহায়তা কমিয়ে আনতে হবে, আমদানিতে উচ্চ শূল্ক বন্ধ করতে হবে। এতে একদিকে রপ্তানি খাত ঝুঁকিতে পড়বে, অন্যদিকে আমদানি বিকল্প দেশীয় শিল্প সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। উš§ুক্ত বাজার প্রক্রিয়ায় পরিবর্তিত এ বাস্তবতায় স্থানীয় শিল্পকে দক্ষতা ও কৌশল দিয়ে বহির্বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হবে। যদিও সরকার এক্ষেত্রে কী ধরনের কৌশল গ্রহণ করছে, তা নিয়ে অর্থমন্ত্রী বিস্তারিত কিছুই বলেননি।

এভাবে বাজেট বক্তব্যের শুরুর দিকে অর্থমন্ত্রী সমাধানহীন সমস্যার অবতারণা ও ক্ষেত্রবিশেষে স্বয়ংক্রিয় সমাধান প্রত্যাশা করেছেন। তবে এরপর শুধু দেশের উন্নয়ন আর অগ্রগতির স্তুতিই বেশি গেয়েছেন। সবশেষে তিনি বলেন, চলমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং অভ্যন্তরীণ সামষ্টিক অর্থনীতির অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে রাজস্ব আয়ের যুগোপযোগী সংস্কার এবং সেই লক্ষ্যে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন, কর নেট বৃদ্ধি, করবহির্ভূত রাজস্ব আদায় এবং প্রশাসনিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে, যাতে পর্যাপ্ত সম্পদের জোগান নিশ্চিত করা যায়।

বাজেট ঘাটতি ধারণযোগ্য পর্যায়ে রেখে তা নির্বাহে বৈদেশিক উৎসের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করা হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কৃচ্ছ সাধন কর্মসূচি সীমিত পরিসরে চালু রাখা হলেও উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে নিম্ন আয়ের মানুষের সুরক্ষা প্রদান কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো হবে।

যদিও বাজেট ঘাটতি মেটাতে বিদেশি উৎসের ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো হয়নি। আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ ধরা হয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। শেষ হতে যাওয়া অর্থবছর সংশোধিত বাজেটে এ লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে এক লাখ দুই হাজার ৬৯৩ কোটি টাকা।

উল্লেখ্য, আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেটের আকার ধরা হয়েছে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। যদিও গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার সাত লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। গত অর্থবছর এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল পাঁচ লাখ কোটি টাকা। তবে তা অর্জিত হবে না দেখে সংশোধিত বাজাটে কমিয়ে ধরা হয়েছে চার লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা।