নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরীতে সরকারের যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে, সেগুলো যেন ঝুঁকি ও ঝামেলামুক্ত থাকে, নাগরিক নিরাপত্তায় বিঘ্ন ও জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে না দাঁড়ায় এবং একই সঙ্গে যেন নির্বিঘ্নে কাজগুলো সম্পাদিত হতে পারে, সেজন্য সব সেবা সংস্থার মধ্যে সমন্বয় আবশ্যক।
গতকাল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) আন্দরকিল্লাস্থ পুরনো নগর ভবনে এক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এসব কথা বলেন।
শিগগির নগরীর ফুটপাতগুলোকে অবৈধ দখলদারমুক্ত করে চলাচলের উপযুক্ত করা হবে। নগরীর বাজারগুলোকে পরিবেশহানিকর পলিথিনমুক্ত করার জন্য যে কর্মসূচি নেয়া হয়েছে তা সফল করতে নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছেন চসিক মেয়র। পলিথিনের পরিবর্তে পাটের বা কাপড়ের তৈরি থলে ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার জন্য কাউন্সিলরদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মেয়র বলেন, নগরীতে মশার উপদ্রব যে হারে বেড়েছে, তা থেকে পরিত্রাণের জন্য মশক নিধনের কার্যকর ওষুধ ছিটানোসহ নালা-নর্দমা ও ঝোপঝাড়গুলোয় পরিকল্পিত ও সঠিক তদারকির মাধ্যমে পরিচ্ছন্নতার অভিযান শুরু হয়েছে। যেসব রাস্তা, গলি ও উপগলি বৃষ্টিজনিত কারণে খানাখন্দ সৃষ্টি করেছে, তা প্যাচওয়ার্কের মাধ্যমে সংস্কার এবং যেখানেই খানাখন্দ দৃশ্যমান হবে, তা শিগগির সংস্কারের জন্য প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মেয়র আরও বলেন, আমি পরিচ্ছন্ন নগরী দেখতে চাই। পরিচ্ছন্ন বিভাগে কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করার পরও চট্টগ্রাম নগরী পরিপূর্ণভাবে পরিচ্ছন্ন নগরী হয়ে উঠতে পারেনি, যা কোনো অবস্থায় গ্রহণযোগ্য নয়।
মেয়র পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধনে নিয়োজিতদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করার জন্য নির্দেশনা দিয়ে বলেন, কোনো গাফিলতি দৃশ্যমান হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, ফুটপাতগুলোকে যতবারই দখলমুক্ত করা হয়েছে, তা আবার বেদখল হয়ে যায়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলাপ হয়েছে। তারা আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে।
সভায় সিটি করপোরেশনের মার্কেট ও দোকানগুলোয় প্রি-পেইড মিটার স্থাপন, আবাসিক এলাকায় অনুমতিবিহীন গেট অপসারণ, সৌন্দর্যবর্ধনে নীতিমালা প্রণয়ন, বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ, নগরীর সবুজায়ন উদ্ধারকরণসহ সাতটি রাস্তা সম্প্রসারণ, চসিক উন্নয়ন কাজ চলাকালে নির্ধারিত স্থানে সাইনবোর্ড স্থাপন, যান্ত্রিক বিভাগের গাড়িগুলো মেরামতের জন্য মাদারবাড়িতে শেড তৈরি করাসহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন, মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম প্রমুখ।