উন্নয়ন পরিকল্পনায় রূপকল্প ২০৪১ সমুন্নত রাখার তাগিদ শিল্পমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক: রূপকল্প ২০৪১-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসহ সব উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেন, উন্নয়নের বর্তমান ধারা ধরে রেখে ২০২৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জন করে বাংলাদেশের অর্থনীতি-পরবর্তী উচ্চতর অগ্রগতির পথে যাত্রা করবে।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ আযয়োজনে গতকাল অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা দলিলের খাতভিত্তিক অধ্যায় ১, ২ ও ৩ এর ওপর জুম প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ পরামর্শ দেন তিনি। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন  বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এতে সম্মানিত অতিথি ছিলেন। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসজনিত ক্ষয়ক্ষতির প্রভাব মোকাবিলায় বিভিন্ন ক্যাটেগরির শিল্প ও সেবা খাতের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত ৭২ হাজার হাজার ৫০০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের ফলে আমাদের ম্যানুফ্যাকচারিং ও সেবা শিল্প এরই মধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। শিল্পমন্ত্রী এ সময় ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে থাকা অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, কুটির ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্প খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে অর্থায়ন সুবিধা নিশ্চিত করার তাগিদ দেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা দলিলে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করার পাশাপাশি ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্প খাতের উন্নয়ন এবং সেবা খাত বিকাশের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর ফলে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তোলার কাজ যেমন এগিয়ে যাবে তেমনি নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, বেসরকারি উদ্যোক্তাদের হাত ধরে যাতে দেশের সামগ্রিক শিল্প খাত এগিয়ে যেতে পারে সে জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে শিল্পবান্ধব আইন, বিধি, কর ও শুল্ক কাঠামো, কোয়ালিটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও ভৌত অবকাঠামো গড়ে তুলেছে। ফলে জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্প খাতের অবদান ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে শিল্প খাতের অবদান ৩০ দশমিক ৪২ থেকে বেড়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে  ৩৫ দশমিক ১৪ শতাংশে উন্নীত হয়।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, পাট, চামড়া, চায়ের মতো স্থানীয় কাঁচামালভিত্তিক যে সব শিল্প খাতে সর্বোচ্চ মূল্য সংযোজন সম্ভব, সেগুলোর প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। তিনি বলেন, পরিবেশবান্ধব আঁশ পাটের চাহিদা বিশ্ববাজারে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। চাষিরা অগের তুলনায় বেশি দামে পাট বিক্রি করতে পেরে লাভবান হচ্ছেন। বেসরকারি খাতে পরিচালিত পাটকলগুলো ভালো করছে বলে তিনি এ সময় উল্লেখ করেন। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী স্থানীয় শিল্পগুলোর সুরক্ষায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

ফরহাদ হোসেন তার বক্তৃতায় শতভাগ স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতা নিশ্চিত করতে ন্যায়পাল ব্যবস্থা কার্যকর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ঝুলে থাকা বা বিচারাধীন মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বিচার বিভাগে জনবল বৃদ্ধির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি ও নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে এসএমই খাত অত্যন্ত কার্যকর। তিনি এ খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য তিনি সহজ শর্তে ঋণ ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা আহ্বান জানান।

সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিনিয়োগকারীদের একটি সুখবর হচ্ছে শিল্পস্থাপনে জমি নিবন্ধন ও নামজারির কাজ যাতে সাত দিনের মধ্য নিশ্চিত করা যায়, সে রকম একটি ব্যবস্থা শিগগিরই চালু করা হবে। এতে বিনিয়োগ যেমনি বাড়বে, তেমনি সুশাসনও নিশ্চিত হবে।

ভার্চুয়াল সভায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব কেএম আবদুস সালাম, জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, শিল্প সচিব কেএম আলী আজম, বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা আফরোজ, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, এমসিসিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল ফারুক আহমেদ, এসিআইয়ের চেয়ারম্যান আনিস উদ দৌলা, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী সভায় বক্তৃতা করেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০