20প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:
জাতিসংঘের অর্থনৈতিক শ্রেণীকরণ কমিটি গত ১৭ তারিখ বলেছে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে যাচ্ছে। তারা তিন বছর পরপর এই সংখ্যা নির্ণয় করে এবং এটি বোঝার জন্য তিনটি সূচক আছে। তা হচ্ছে, মানবসম্পদ উন্নয়ন, মাথাপিছু আর্থিক আয় ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা। এই তিনটি বিষয়ে পরপর দুই বছর উত্তীর্ণ হতে হবে। আর এই তিনটি বিষয়েই বাংলাদেশ উত্তীর্ণ হতে পেরেছে এবং এই ধারা আগামী ছয় বছর ধরে রাখতে পারলে বাংলাদেশ স্বল্প উন্নত আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে পারবে। আর এই ধারা আগামী ছয় বছর বজায় রাখতে হলে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর পর্যাপ্ত সমর্থন দিতে হবে। পাশাপাশি আমাদের একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার দরকার। এমন মন্তব্য করেছেন ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. জাভেদ সিদ্দিকী।
গতকাল খুজিস্তা নূর-ই-নাহারীনের সঞ্চালনায় এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অপর আলোচক ছিলেন অর্থিক খাত বিশ্লেষক মাহমুদ হোসেন, এফসিএ।
তিনি বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর ভালো কর্মক্ষমতা থাকতে হবে। আর ভালো কর্মক্ষমতার জন্য দরকার করপোরেট সুশাসন। অডিটিং পেশার সবাইকে একটি পর্যায়ে আসতে হবে, যাতে তারা সবাইকে সমর্থন করতে পারে। এই সমর্থন যদি না করতে পারে তাহলে অর্জন করলেও এটিকে বহাল রাখা বা আরও উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক সূচকগুলো ভালো অবস্থায় আছে এবং এটিকে দীর্ঘ সময় বহাল রাখতে হলে এটির আশপাশের অন্য ব্যবস্থাগুলো শক্তিশালী করার জন্য দৃষ্টি দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে মাহমুদ হোসেন বলেন, যখন আমরা স্বল্প উন্নত আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবো, তখনই রফতানির ওপর প্রচণ্ড পরিমাণে প্রভাব পড়বে। লক্ষ করলে দেখবেন দেশের অর্থনীতিতে সরকারি ব্যয় জিডিপিতে অনেক বেশি অবদান রাখে। জিডিপেতে রফতানি থেকে আর্নিংয়ের অবদান ৪১ শতাংশ। আর এটি যদি প্রভাবিত হয় তাহলে আমরা যে বিভিন্ন ডিউটি (শুল্ক) পাই সেটি প্রভাবিত হবে। বিগত দশ বছরে যে দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছিল তারা তা বহাল রাখতে পারেনি। সেদিক বিবেচনায় আমাদের অর্থনীতি অনেকটা কারখানাজাত বা শিল্পায়নের দিকে যেতে হবে।
তিনি বলেন, যদিও আমাদের রেমিট্যান্স আছে, কিন্তু এই রেমিট্যান্স দিয়ে সব সময় অর্থনীতিকে সহায়তা করতে পারবে না। অর্থনীতি ও শিল্পায়নকে সমর্থন করার জন্য ক্যাপিটাল মার্কেট যে অবস্থায় থাকা দরকার ওই অবস্থায় নেই। আবার পুঁজিবাজার সম্প্রসারণের জন্য যেই প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মক্ষমতা ও সক্ষমতা আনা দরকার সেখানেও কিন্তু নীতিনির্ধারকদের সেরকম কোনো দৃষ্টিপাত নেই। কাজেই এ বিষয়ে আমাদের খুব দ্রুতই নজর দিতে হবে এবং একটি সমন্বিত প্রচেষ্টায় কিছু পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হবে বলে মনে করি।
শ্রুতিলিখন: রাহাতুল ইসলাম