অর্থনীতির উন্নয়নে পুঁজিবাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের কারসাজির কারণে বাজার সঠিকভাবে দাঁড়াতে পারছে না। কিছু ব্যক্তির স্বার্থের কারণে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতেও পারছে না। ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বাজারে আস্থা ফিরে পাচ্ছেন না। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে এবং আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। ফলে সরকারের ভাবর্যাদা নষ্ট হচ্ছে। অর্থনীতির উন্নয়নের স্বার্থে ওইসব কালোবাজারিকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে সঠিকভাবে বিচার করতে হবে এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইসিএবি’র কাউন্সিল সদস্য সাব্বির আহমেদ, এফসিএ।
সাব্বির আহমেদ বলেন, এখন দেশ ২০ বছরের আগের অবস্থানে নেই। দেশের অর্থনীতি এখন ভালো অবস্থানে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের অর্থনীতির আরও অগ্রগতি হবে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ মানসিকতা নিয়ে সামনের দিকে এগোতে হবে। কারণ, বিভিন্ন দেশ থেকে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে এবং বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে কাজ হবে। ওইসব মেগা প্রকল্প কতদিনে শেষ হবে বা কতদিন লাগতে পারে এবং কাজের মান কীরকম এ বিষয়গুলো তারা দেখবে। তবে এটির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ হচ্ছে এবং এর বড় একটি ঋণের অংশ পরিশোধ করতে হবে অতিশিগগিরই। এরই মধ্যে ঋণের অর্থ পরিশোধ করার কাজ শুরু হয়ে গেছে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ পড়ছে। আবার আমাদের দেশ আমদানিনির্ভর। রফতানির তুলনায় আমদানি বেশি হচ্ছে। বিভিন্ন খাতের কোম্পানির কাঁচামাল বেশিরভাগই আমদানি করতে হচ্ছে। এতে দীর্ঘ মেয়াদে আর্থিক খাত ঝুঁকিতে পড়বে। ফলে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাবে এবং এর প্রভাব বাজারে পড়বে। যেহেতু দেশের অর্থনীতির আকার বড় হচ্ছে, তাই এখন সময় এসেছে এ বিষয়গুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করা। এরই মধ্যে সরকার প্রতিজ্ঞা করেছে কোনো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। যাতে কিছু ব্যক্তির কারণে সরকারের দুর্নাম না হয়। সরকার বড় যে প্রকল্পগুলো হাতে নিয়েছে, সেগুলোর কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে কি না বা কোনো মেন্যুপুলেশন হচ্ছে কি না, তা অত্যন্ত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, অর্থনীতির উন্নয়নে পুঁজিবাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বাজার সঠিকভাবে দাঁড়াতে পারছে না। বাজারে বিভিন্ন ধরনের কারসাজি হচ্ছে। কিছু ব্যক্তির স্বার্থের কারণে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে না এবং সাধারণ বিনিয়োগকারী বাজারে আস্থা ফিরে পাচ্ছে না। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে এবং আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। ফলে সরকারের ভাবমর্যাদা নষ্ট হচ্ছে। অর্থনীতির উন্নয়নের স্বার্থে ওইসব কালোবাজারিকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে সঠিকভাবে বিচার করা এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এছাড়া মানি, ক্যাপিটাল মার্কেট ও ফরেন কারেন্সি এ তিনটি উপাদানের প্রতি সরকারকে বেশি নজরদারি করা উচিত। কারণ, এ তিনটি উপাদান অর্থনীতির উন্নয়নে বড় ভূমিকা পালন করে। আবার ব্যাংক খাত নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এর মূল কারণ খেলাপি ঋণ। দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে ব্যাংকের অবদান অনেক এটি ঠিক; কিন্তু ব্যাংকগুলো আশানুরূপ পারফরমেন্স করতে পারছে না। বিশেষ করে সুশাসন ও খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। অবশ্য সব ব্যাংক নয়; তবে বেশিরভাগ ব্যাংকের ক্ষেত্রেই এটি দেখা গেছে।
শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ