নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), উভয় বাজারে গতকাল লেনদেন ও সূচক বেড়েছে। প্রায় দুই মাস পুঁজিবাজার বন্ধ থাকার পর গত সপ্তাহে উভয় বাজারে পুনরায় লেনদেন শুরু হয় এবং লেনদেন শুরুর দ্বিতীয় দিন থেকে ধারাবাহিকভাবে বাজারের পতন হয়। গত সপ্তাহে টানা চারদিন পতনের পর গতকাল চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে আগের দিনের তুলনায় সূচক ও লেনদেন বেড়েছে। গতকাল বেশিরভাগ শেয়ারের দর অপরিবর্তিত ছিল। ডিএসইতে গতকাল শেয়ার কেনার চাপ ধারাবাহিকভাবে বাড়ার সঙ্গে সূচকও ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে। দেড় ঘণ্টা লেনদেনের পর সূচকের গতি সামান্য নি¤œমুখী হলেও শেয়ার কেনার চাপে শেষ পর্যন্ত সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী হয়। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্র দেখা গেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আট দশমিক ১২ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ বেড়ে তিন হাজার ৯৬১ দশমিক ৫১ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক দুই দশমিক ৬২ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়ে ৯১৮ দশমিক ৫৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। অন্যদিকে ডিএস৩০ সূচক ছয় দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৩২৭ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে স্থির হয়।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয় ৭০ কোটি দুই লাখ তিন হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪২ কোটি ৯৭ লাখ ২১ হাজার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ২৭ কোটি চার লাখ টাকা। এদিন এক কোটি ৯৮ লাখ ৭২ হাজার ২২২টি শেয়ার ১২ হাজার ২২৩ বার হাতবদল হয়। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন প্রায় ২৫২ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ১০ হাজার ২১৯ কোটি ১৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকায়।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। কোম্পানিটির ৯ কোটি ৭০ লাখ ১৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর অপরিবর্তিত ছিল। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা গ্রামীণফোন লিমিটেডের ৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে ২০ পয়সা। সেন্ট্রাল ফার্মার ৪ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে এক টাকা ১০ পয়সা। এরপরের অবস্থানগুলোতে থাকা বেক্সিমকো ফার্মার তিন কোটি ৮২ লাখ টাকার, লিন্ডে বাংলাদেশের ৩ কোটি ২৯ লাখ টাকার, সামিট পাওয়ারের ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকার, বেক্সিমকোর ২ কোটি ১০ লাখ টাকার, ইন্দো-বাংলা ফার্মার ২ কোটি ২ লাখ টাকার, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলের এক কোটি ৪৫ লাখ টাকার এবং এক্সিম ব্যাংক লিমিটেডের ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
৯ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল সেন্ট্রাল ফার্মা। বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ারদর ৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ, এক্মি ল্যাবের ৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের ৩ দশমিক ৭২ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংকের দুই দশমিক ২৭ শতাংশ, সিলভা ফার্মার ২ দশমিক ১৬ শতাংশ, বেক্সিমকোর এক দশমিক ৫০ শতাংশ এবং লিন্ডে বাংলাদেশের এক দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে চার দশমিক ৫৬ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে দুলামিয়া কটন স্পিনিং মিলস লিমিটেড। বেক্সিমকো সিনথেটিকসের দর চার দশমিক শূন্য আট শতাংশ, ঢাকা ডায়িংয়ের দর তিন দশমিক ১২ শতাংশ, শাইনপুকুর সিরামিকের দর দুই দশমিক ৩৮ শতাংশ, এসিআই ফর্মুলেশনসের দর দুই দশমিক ২৫ শতাংশ, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের দর দুই দশমিক ১৭ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ১৪ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ বেড়ে ছয় হাজার ৮২২ দশমিক ৯২ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৩ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ বেড়ে ১১ হাজার ২৬০ পয়েন্টে অবস্থান করে। সিএসইতে ৯০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে। দর বেড়েছে ১৫টির, কমেছে ১৬টির এবং ৫৯টির দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৭৬ লাখ ৮৮ হাজার ৪৬২ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪ কোটি ৫৯ লাখ ৬৬ হাজার ২৮ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৫ কোটি ১৭ লাখ ২২ হাজার টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড। কোম্পানিটির ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের এক কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপরে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের ৫৭ লাখ, স্কয়ার ফার্মার ২৯ লাখ টাকার, বেক্সিমকোর ৮ লাখ টাকার, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলের ৫ লাখ, আনলিমা ইয়ার্নের চার লাখ এবং এক্সিম ব্যাংকের তিন লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।