নিজস্ব প্রতিবেদক: গতকাল বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) উভয় বাজারে সূচক ও লেনদেন কমেছে। এদিন বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। বাকি শেয়ারের মধ্যে বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমায় সূচক ও লেনদেন কমেছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন কমেছে প্রায় ৪৭৫ কোটি টাকার। গতকাল সূচক পতনের মধ্য দিয়ে বাজারে লেনদেন শুরু হয় তবে দুই ঘণ্টা পর বাজারে সূচকের গতি ফিরে আসে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দুই দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ কমে তিন হাজার ৯৮৬ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক দুই দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৩২ শতাংশ কমে ৯২২ দশমিক ১০ পয়েন্টে অবস্থান করে। অন্যদিকে ডিএস৩০ সূচক এক দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১১ শতাংশ কমে এক হাজার ৩৩৯ দশমিক ৪৯ পয়েন্টে স্থির হয়।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয় ৮১ কোটি ১৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫৫৫ কোটি ৭১ লাখ ৫২ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ৪৭৪ কোটি ৫২ লাখ টাকার। এদিন দুই কোটি ৭৫ লাখ ৪৬ হাজার ৫৯০টি শেয়ার ২০ হাজার এক বার হাতবদল হয়।
এদিন মোট ২৭৩টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ২৪টির এবং কমেছে ৩৬টির। বাকি ২১৩টি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন ১৯১ কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ১১ হাজার ৭৭৫ কোটি ১৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকায়।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। কোম্পানিটির ১০ কোটি ৯৯ লাখ ৩৩ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর দুই টাকা ৪০ পয়সা কমেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি লিমিটেডের সাত কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে এক টাকা ৯০ পয়সা। ওয়াটা কেমিক্যালের চার কোটি ৬০ লাখ টাকার, শেয়ারদর আট টাকা ৩০ পয়সা বেড়েছে।
এরপরের অবস্থানগুলোতে থাকা ইন্দো-বাংলা ফার্মার দুই কোটি ৯৩ লাখ ৭৭ হাজার টাকার, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের দুই কোটি ৪৮ লাখ, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের দুই কোটি ২৪ লাখ, যমুনা ব্যাংকের এক কোটি ৭২ লাখ, এমজেএল বাংলাদেশের এক কোটি ৫৫ লাখ ৭১ হাজার, ফার্মা এইডসের এক কোটি ৫৫ লাখ ৩৯ হাজার এবং আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের এক কোটি ৫৪ লাখ ১৯ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
সাত দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে ছিল পূবালী ব্যাংক লিমিটেড। প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের তিন দশমিক ১১ শতাংশ, এমজেএল বাংলাদেশের দুই দশমিক ৯৩ শতাংশ, ওয়াটা কেমিক্যালের দুই দশমিক ২৫ শতাংশ, পিপলস ইন্স্যুরেন্সের এক দশমিক ৯৮ শতাংশ, ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের এক দশমিক ৫০ শতাংশ, বারাকা পাওয়ারের এক দশমিক শূন্য এক শতাংশ, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের এক শতাংশ এবং ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।
অন্যদিকে সাত দশমিক ৪৬ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে বেক্সিমকো সিনথেটিকস লিমিটেড। সিএনএ টেক্সের দর পাঁচ দশমিক ২৬ শতাংশ, ফ্যামিলিটেক্সের দর পাঁচ শতাংশ, ইসলামী ব্যাংকের চার শতাংশ, বেক্সিমকো ফার্মার তিন দশমিক ৬১ শতাংশ, ফাইন ফুডসের তিন দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ এবং এসিআইয়ের দর তিন দশমিক শূন্য তিন শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসসিএক্স সাত দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১১ শতাংশ কমে ছয় হাজার ৮৫৪ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১১ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ কমে ১১ হাজার ৩২১ দশমিক ১২ পয়েন্টে অবস্থান করে। সিএসইতে ১২৪টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে। দর বেড়েছে ১৮টির, কমেছে ২৭টির এবং ৭৯টির দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে দুই কোটি ৩২ লাখ ৬২ হাজার ৮৬৯ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২২৬ কোটি ১৬ লাখ ৫৪ হাজার ৫৫৪ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ২২৩ কোটি ৮৩ লাখ ৯১ হাজার টাকার।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। কোম্পানিটির ৩২ লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের ২৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার, বেক্সিমকো ফার্মার ২৪ লাখ ৭০ হাজার, গ্রামীণফোনের ১৫ লাখ ৯০ হাজার, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্লের ১২ লাখ ৪০ হাজার, এমজেএল বাংলাদেশ লিমিটেডের আট লাখ ৪০ হাজার, অ্যাডভেন্ট ফার্মার সাত লাখ ৭০, যমুনা ব্যাংকের সাত লাখ ১০ হাজার, ওয়ান ব্যাংকের ছয় লাখ ৬০ হাজার এবং প্রগতি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ছয় লাখ ৫০ হাজার টাকার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।