নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের তৃতীয় দিনে উভয় বাজারে দর সংশোধন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল প্রায় ৫০ শতাংশ কোম্পানির দরপতনে সবকটি সূচক নেতিবাচক অবস্থানে চলে যায়। লেনদেন কমে সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা হয়েছে। শুরুতেই ডিএসইএক্স সূচকের উত্থান হলেও আধঘণ্টা পর বিক্রির চাপ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ফলে সূচকও ধীরে ধীরে নেমে যায়। শেষ পর্যন্ত প্রধান সূচকের ২৭ পয়েন্ট পতন হয়। বাকি দুই সূচকও পতনে ছিল। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সব সূচক, শেয়ারদর ও লেনদেনে পতন হয়।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৬০ শতাংশ কমে চার হাজার ৪৭৯ দশমিক ৪০ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক তিন দশমিক ৪৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৩ শতাংশ কমে এক হাজার ৩১ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৯ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে এক হাজার ৫২৬ দশমিক ৩০ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন দুই হাজার চার কোটি ৩৭ লাখ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪২ হাজার ৫৭০ কোটি ৯১ লাখ ৭২ হাজার টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ৪৫৩ কোটি ৮৮ লাখ ২৬ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫০৬ কোটি ৩৫ লাখ ৯ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ৫২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এদিন ১৭ কোটি ২৫ লাখ ৬০ হাজার ৮২৩ শেয়ার এক লাখ ৩৭ হাজার ৭৮২ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৬ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৩১টির, কমেছে ১৭৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৮টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ। কোম্পানিটির ২৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে ২০ পয়সা। এরপর বিবিএস কেব্লসের ১৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে এক টাকা ২০ পয়সা। সামিট পাওয়ারের ১২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে ১০ পয়সা। স্কয়ার ফার্মার ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ১০ পয়সা। গ্রামীণফোনের ১০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে পাঁচ টাকা ৭০ পয়সা। এছাড়া ইন্দোবাংলা ফার্মার ১০ কোটি ১৩ লাখ টাকা, খুলনা পাওয়ারের ৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা, এডিএন টেলিকমের আট কোটি ৮৬ লাখ টাকা, ওইম্যাক্সের আট কোটি, ভিএফএস থ্রেডের আট কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়ে জেমিনি সি ফুড দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে। এরপর প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের দর ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ, মুন্নু সিরামিকের আট দশমিক ২৪ শতাংশ, মুন্নু জুট স্টাফলার্সের সাত দশমিক ৪৪ শতাংশ, ইন্দোবাংলা ফার্মার সাত শতাংশ, এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ছয় দশমিক ৫২ শতাংশ, ফু-ওয়াং ফুডের ছয় দশমিক ২৯ শতাংশ, প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি এএমসিএল মিউচুয়াল ফান্ডের ছয় শতাংশ, সিএপিএম আইবিবিএল মিউচুয়াল ফান্ডের পাঁচ দশমিক ৬৩ শতাংশ, বেঙ্গল উইন্ডসর থার্মোপ্লাস্টিকসের দর পাঁচ শতাংশ বেড়েছে।
আট দশমিক ৮২ শতাংশ কমে দরপতনের শীর্ষে উঠে আসে ঢাকা ডায়িং। তাল্লু স্পিনিংয়ের দর ছয় দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ কমেছে। মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের দর পাঁচ দশমিক ৭৮ শতাংশ, জিবিবি পাওয়ারের পাঁচ দশমিক ৬২ শতাংশ, ইউনাইটেড এয়ারের পাঁচ দশমিক ৫৫ শতাংশ, মিথুন নিটিংয়ের চার দশমিক ৬৫ শতাংশ, প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের চার দশমিক ৬১ শতাংশ, তুংহাই নিটিংয়ের চার দশমিক ৩৪ শতাংশ, জেনেক্স ইনফোসিসের চার দশমিক ১৯ শতাংশ ও তাকাফুল ইন্স্যুরেন্সের দর চার শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ৪২ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৫১ শতাংশ কমে আট হাজার ২৬৯ দশমিক ৫৩ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬৯ দশমিক শূন্য পাঁচ পয়েন্ট বা দশমিক ৫০ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ৬৪২ দশমিক ৬০ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৪৭ কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৮৮টির, কমেছে ১৩২টির, অপরিবর্তিত ছিল ২৭টির দর।
সিএসইতে এদিন ১৮ কোটি ২০ লাখ ৩৬ হাজার ৫৫৩ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৩ কোটি ৪১ লাখ ৩১ হাজার ১০৩ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে পাঁচ কোটি ২০ লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ। কোম্পানিটির এক কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা বেক্সিমকোর এক কোটি ১৫ লাখ, এসএস স্টিলের ৭৩ লাখ, অ্যাডভেন্ট ফার্মার ৭২ লাখ, এডিএন টেলিকমের ৬৪ লাখ, বিবিএস কেব্লসের ৫৯ লাখ, স্কয়ার ফার্মার ৫৮ লাখ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ৫৬ লাখ ও স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
