নিজস্ব প্রতিবেদক: লেনদেন না কমলেও গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবকটি সূচক নিম্নমুখী ছিল। এর মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৯ পয়েন্ট নেমে যায়। ব্যাংক খাতের ব্যাপক পতনই এ সূচক পতনের প্রধান কারণ। তবে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কমেনি। কমেছে বেশিরভাগ শেয়ায়ের দর। লেনদেনের শুরু থেকেই বিক্রির চাপ বাড়তে থাকে, যে কারণে সূচকও ক্রমেই নেমে যেতে থাকে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত সূচকের এ গতি অব্যাহত ছিল। তবে বেলা ১টার পর ক্রয় চাপ সামান্য বাড়লেও তা সূচকের গতি পরিবর্তন করতে পারেনি। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের একই চিত্র লক্ষ করা গেছে। তবে সিএসইতে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এদিন ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৫৯ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৫ শতাংশ কমে ছয় হাজার ১০৬ দশমিক ২৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ৮ দশমিক ৬০ পয়েন্ট বা দশমিক ৬২ শতাংশ কমে এক হাজার ৩৫৭ দশমিক ৬০ পয়েন্টে আর ডিএস৩০ সূচক ১৩ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৬২ শতাংশ কমে দুই হাজার ১৮৫ দশমিক ৯৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন কমে চার লাখ সাত হাজার ৭৯৫ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার ১৪৯ টাকা হয়।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয় ৬৬৬ কোটি ১৭ লাখ ১৬ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৬২ কোটি এক লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন বেড়েছে চার কোটি ১৫ লাখ টাকা। এদিন ২১ কোটি ৩১ লাখ ৭৭ হাজার ১১৮টি শেয়ার এক লাখ ৯ হাজার ৭০১ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৩০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৮টির, কমেছে ১৮০টির, অপরিবর্তিত ছিল ৪২টির দর।
টাকার অঙ্কে ও শেয়ার সংখ্যায় লেনদেনের শীর্ষে ছিল ন্যাশনাল ব্যাংক। ২৯ কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজার টাকায় ব্যাংকটির এক কোটি ৯৬ লাখ ৪২ হাজার ৬০৪টি শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর ৭০ পয়সা কমেছে। এরপরের অবস্থানগুলোয় ছিল শাহ্জালাল ব্যাংক, বিবিএস কেব্লস, যমুনা ব্যাংক, আইএফআইসি, স্কয়ার ফার্মা, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, এক্সিম ব্যাংক ও উত্তরা ব্যাংক। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শেয়ার লেনদেনে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল শাহ্জালাল ব্যাংক। কোম্পানিটির এক কোটি আট লাখ ৩৩ হাজার ১৬৬টি শেয়ার ২৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকায় লেনদেন হয়। এরপরের অবস্থানগুলোয় ছিল আইএফআইসি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ব্যাংক, ইউসিবি ও উত্তরা ব্যাংক।
৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ দর বেড়ে বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে বিবিএস কেব্লস। সাত দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়েছে এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। এরপরে ছয় দশমিক ৯৯ শতাংশ বাড়ে এপেক্স স্পিনিংয়ের। বিবিএস ছয় দশমিক ২০ শতাংশ ও এইচ আর টেক্স বেড়েছে পাঁচ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ। অন্যদিকে পাঁচ দশমিক ৮৮ শতাংশ দর কমেছে পূবালী ব্যাংকের। সাভার রিফ্র্যাক্টরিজ চার দশমিক ৮৩ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংক চার দশমিক ৭৩ শতাংশ, এপেক্স ফুটওয়্যার চার দশমিক ৫৭ শতাংশ ও নিটল ইন্স্যুরেন্স কমেছে চার দশমিক ৫৩ শতাংশ।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ১১১ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৪৫৬ পয়েন্টে, সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৭৮ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৯৫১ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল দিনজুড়ে ২৪৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে ৮৭টির দর বেড়েছে, কমেছে ১২৪টির, অপরিবর্তিত ছিল ৩৩টির দর।
সিএসইতে এদিন ৪৮ কোটি ৮৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫৪ কোটি ৯৫ লাখ এক হাজার টাকার শেয়ার। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ছয় কোটি পাঁচ লাখ টাকা। লেনদেনের শীর্ষে ছিল ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স। কোম্পানিটির ১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপর এনবিএল দুই কোটি ৮৮ লাখ টাকার, বেক্সিমকো দুই কোটি ৪৬ লাখ, খুলনা পাওয়ার দুই কোটি ১০ লাখ, বিবিএস কেব্লস এক কোটি ৬২ লাখ, সাইফ পাওয়ার এক কোটি ৫৯ লাখ, আইএফআইসি এক কোটি ৪৩ লাখ, মেঘনা পেট্রোলিয়াম এক কোটি ৩৪ লাখ, লংকাবাংলা এক কোটি ২৬ লাখ ও এক্সিম ব্যাংক ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
Add Comment