উভয় বাজারে সূচকের মিশ্র প্রবণতায় লেনদেন কমেছে ৩০৬ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে গতকাল বেশিরভাগ শেয়ারের দর বাড়লেও লেনদেন ব্যাপক হারে কমেছে। আর সূচকে ছিল মিশ্র প্রবণতা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল ডিএসইএক্স সূচক ও ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ইতিবাচক হলেও কমেছে ডিএস ৩০ সূচক। বেড়েছে ৫২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর। কমেছে ৩২ শতাংশের দর। লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান দিয়ে লেনদেন শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় ডিএসইএক্স সূচক আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়েন্ট বেশি বাড়লেও সাড়ে ১১টার পর থেকে বিক্রির চাপ শুরু হলে সূচকের পতন হতে থাকে। বেলা পৌনে ১টার দিকে আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট নেমে যায়। তবে দুপুর ১টার পর থেকে ফের শেয়ার কেনার চাপ বাড়তে থাকে। লেনদেন শেষে প্রধান সূচক মাত্র এক দশমিক ৭৫ পয়েন্ট ইতিবাচক থাকতে পেরেছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এক দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য তিন শতাংশ বেড়ে চার হাজার ৯৪৯ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক এক দশমিক ৫১ পয়েন্ট বা দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ১৪০ দশমিক শূন্য দুই পয়েন্ট বেড়েছে। অন্যদিকে ডিএস ৩০ সূচক দশমিক ২১ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য এক শতাংশ কমে এক হাজার ৭৫৯ দশমিক ৭৫ পয়েন্টে স্থির হয়।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয় ৩০৪ কোটি ২৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫৯৫ কোটি ৭৮ লাখ ৭২ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ২৯১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। এদিন ১০ কোটি ৫১ লাখ ছয় হাজার ১০৫টি শেয়ার এক লাখ ২৩৪ বার হাতবদল হয়। এদিন ডিএসইর বাজার মূলধন ৯৭ কোটি ২১ লাখ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৭৩ হাজার ৭৫৬ কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার ৭৪ টাকা। লেনদেন হওয়া ৩৫২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৩টির, কমেছে ১১৩টির, অপরিবর্তিত ছিল ৫৬টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ওষুধ ও রসায়ন খাতের জেএমআই সিরিঞ্জ। কোম্পানিটির ১২ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর ৩৪ টাকা ৫০ পয়সা বেড়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বীকন ফার্মার ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ৩০ পয়সা। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ১০ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে এক টাকা। এরপরের অবস্থানগুলোতে থাকা স্টাইল ক্রাফটের ১০ কোটি ২৬ লাখ টাকার, ন্যাশনাল টিউবসের ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকার, মুন্নু সিরামিকের আট কোটি ৮২ লাখ টাকা, এসইএমএলএফবিএসএল গ্রোথ ফান্ডের সাত কোটি ১৬ লাখ টাকা, বিএসসিসিএলের ছয় কোটি টাকার, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের পাঁচ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ। এরপরে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়েছে সিএপিএম আইবিবিএল মিউচুয়াল ফান্ডের, সিএপিএম বিডিবিএল মিউচুয়াল পান্ডের দর ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ, জেএমআই সিরিঞ্জের দর আট দশমিক ৬৮ শতাংশ, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজের দর ছয় দশমিক ৭৬ শতাংশ, মুন্নু সিরামিকের দর ছয় দশমিক ৫৪ শতাংশ, মুন্নু জুট স্টাফলার্সের দর ছয় দশমিক ১১ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া প্রিমিয়ার সিমেন্ট পাঁচ দশমিক ৬১ শতাংশ, নুরানী ডায়িং পাঁচ দশমিক ৬০ শতাংশ ও ড্রাগন সোয়েটারের দর পাঁচ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে নয় দশমিক ৪৭ শতাংশ দর কমেছে মিথুন নিটিংয়ের। গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের দর পাঁচ দশমিক ৮৪ শতাংশ, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের দর চার দশমিক ৭৬ শতাংশ, এসপি সিরামিকসের দর চার দশমিক ৭৬ শতাংশ, গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রোর দর সাড়ে চার শতাংশ, ইবিএল এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ডের দর কমেছে চার দশমিক ২৫ শতাংশ।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসসিএক্স দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য তিন শতাংশ বেড়ে ৯ হাজার ১৪০ দশমিক শূন্য এক পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এক দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বা বেড়ে ১৫ হাজার ৪৮ দশমিক ২২ পয়েন্টে অবস্থান করে। তবে সিএসই৫০ সূচক নেতিবাচক অবস্থানে ছিল। সিএসইতে ২৫০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে। দর বেড়েছে ১২৩টির, কমেছে ৯৮টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৯টির দর। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার ৯০ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৭৪ কোটি ১৭ লাখ ৯২ হাজার ৪৩৮ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ১৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল সিঙ্গার বিডি। কোম্পানিটির ১৪ কোটি শূন্য ৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপরে সিটি ব্যাংকের দুই কোটি ৪৮ লাখ টাকার, ডরিন পাওয়ারের দুই কোটি ২০ লাখ টাকার, সামিট পাওয়ারের দুই কোটি টাকার, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৩২ লাখ টাকার, মুন্নু সিরামিকের ৩০ লাখ টাকার, বেক্সিমকোর ২৬ লাখ টাকার, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ২৬ লাখ টাকার, খুলনা পাওয়ারের ২৫ লাখ টাকার, নুরানী ডায়িংয়ের ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।