নিজস্ব প্রতিবেদক : উভয় বাজারে গতকাল সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবকটি সূচকের পতনের পাশাপাশি কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারের দর। তবে লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় বেড়েছে। গতকাল লেনদেনের শুরুতে কেনার চাপে সূচকের উত্থান হলেও মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে বিক্রির চাপ শুরু হয়। ফলে সূচক নেমে যেতে থাকে। দুপুর ১২টার পর শেয়ার কেনার চাপ সামান্য বাড়লেও সোয়া ১১টার দিকে বিক্রির চাপে সূচক নেমে যেতে থাকে। তবে সাড়ে ১২টার দিকে কেনার চাপ বাড়লে সূচকের উত্থান হয়। তবে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত প্রধান সূচকের ১৬ পয়েন্ট পতন দিয়ে লেনদেন শেষ হয়। বাকি দুটি সূচকও নেতিবাচক অবস্থানে চলে যায়। ডিএসইতে গতকাল ৩৩ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে, কমেছে ৫৪ শতাংশের দর। অন্যদিকে চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি সূচকের পতন হয়। লেনদেনও আগের দিনের তুলনায় কমেছে। এছাড়া বেশিরভাগ কোম্পানি দরপতনে ছিল।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৬ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বা দশমিক ২৮ শতাংশ কমে পাঁচ হাজার ৬০৩ দশমিক ২৫ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক চার দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৭ শতাংশ কমে এক হাজার ২৭০ দশমিক ০৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। আর ডিএস ৩০ সূচক ছয় দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৩২ শতাংশ কমে এক হাজার ৯৬৭ দশমিক ৮১ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন কমে তিন লাখ ৯৬ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা হয়। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয় ৬৩৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৬১১ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এদিন ১৮ কোটি ৪৭ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭০টি শেয়ার এক লাখ ৩৫ হাজার ৪৮৬ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৩৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১১টির, কমেছে ১৮২টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৪১টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন। ২৮ কোটি ৬১ লাখ টাকায় কোম্পানিটির আট লাখ আট হাজার ৯০২টি শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর ১০ টাকা ৭০ পয়সা বেড়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা আইপিডিসির ১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানগুলোতে ছিল বারাকা পাওয়ার, বেক্সিমকো লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার, স্কয়ার ফার্মা, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, বিবিএস কেব্লস, অ্যাকটিভ ফাইন ও ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স। ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে প্রাইম টেক্সটাইল। এরপরে ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্সের দর ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ, ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের দর ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ, আইপিডিসির দর ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ, এইচআর টেক্সটাইলের দর আট দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া নাহি অ্যালুমিনিয়াম, বারাকা পাওয়ার, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, দেশবন্ধু পলিমার ও ইস্টার্ন হাউজিং দরবৃদ্ধির শীর্ষ দশের মধ্যে অবস্থান করে।
অন্যদিকে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ কমে সমতা লেদার দরপতনের শীর্ষে উঠে আসে। এছাড়া শ্যামপুর সুগার মিল, মেঘনা পিইটি, মুন্নু সিরামিকস, জিলবাংলা সুগার মিল, দি
পেনিনসুলা, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, আজিজ পাইপস, রূপালী লাইফ ও ইনটেক অনলাইন দরপতনের শীর্ষ দশের তালিকায় উঠে আসে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ৪০ দশমিক ৪১ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৪৩৯ দশমিক ৭০ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭০ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট কমে ১৭ হাজার ২৩৬ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৪৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৮৮টির, কমেছে ১৩৪টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২২টির দর।
সিএসইতে এদিন ৩১ কোটি ৯২ লাখ ২৮ হাজার ৪৫৯ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে ৬১ কোটি ৬৫ লাখ ছয় হাজার ৯৬৮ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ২৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা। সিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স। কোম্পানিটির এক কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপরে বিডি ফাইন্যান্সের এক কোটি ৬২ লাখ টাকার, বারাকা পাওয়ারের এক কোটি ৪৫ লাখ টাকার, আরডি ফুডের এক কোটি ৩৭ লাখ টাকার ও বেক্সিমকোর এক কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এছাড়া সাইফ পাওয়ারের এক কোটি ছয় লাখ, আইপিডিসি ৭৬ লাখ, কনফিডেন্স সিমেন্ট ৬১ লাখ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স ৪৮ লাখ ও শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ৩৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
উভয় বাজারে সূচক ও বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতন
