গত ৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস মধ্যপ্রাচ্যগামী পাঁচটি গন্তব্যে ফ্লাইটের টিকিটের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৬ জানুয়ারি থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। সৌদি আরবের জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও আবুধাবির নতুন টিকিটের জন্য সর্বোচ্চ ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী ঢাকা-জেদ্দা রুটে ইকোনমি ক্লাসের প্রতি টিকিটের একমুখী সর্বোচ্চ ভাড়া ৭২ হাজার ৪৫৫ টাকার স্থলে করসহ ৬৪ হাজার ৮২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা থেকে রিয়াদ ও দাম্মাম গন্তব্যে ইকোনমি ক্লাসের একমুখী সর্বোচ্চ ভাড়া বর্তমানে ৭০ হাজার ৭৫৮ টাকার স্থলে করসহ ৬৩ হাজার ১২৩ টাকা করা হয়েছে। ঢাকা-দুবাই গন্তব্যে ইকোনমি ক্লাসের একমুখী সর্বোচ্চ ভাড়া ৭৫ হাজার ৫০৮ টাকার স্থলে করসহ ৬২ হাজার ৭৮৪ টাকা করা হয়েছে। ঢাকা-আবুধাবী গন্তব্যে ইকোনমি ক্লাসের একমুখী সর্বোচ্চ ভাড়া ৬৭ হাজার ২৫ টাকা থেকে কমিয়ে করসহ ৫৮ হাজার ৫৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিমান ভাড়া কমানোয় প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোও ভাড়া কমাবে বলে আশা করা যায়। এতে উপকৃত হবেন বিদেশগামী অভিবাসী শ্রমিকরা। সাশ্রয়ী ভাড়ায় যথাসময়ে কর্মস্থলে যেতে পারবেন তারা।
গতকাল শেয়ার বিজে প্রকাশিত ‘জেট ফুয়েল ও ফার্নেস অয়েলের দাম কমল’ শীর্ষক প্রতিবেদন পাঠকদের মনোযোগ কাড়বে বলেই ধারণা। উড়োজাহাজে ব্যবহƒত জেট ফুয়েল ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহƒত প্রধান জ্বালানি ফার্নেস অয়েলের দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি)। বর্তমানে জেট ফুয়েলের দাম কমে ৭৩ টাকায় নেমে এসেছে।
জেট ফুয়েলের দাম কেন কমানো হয়েছে, আমরা জানি না। তবে ভাড়া কমানোয় বিমানের আয় কমে যাওয়া ঠেকাতে কৌশল কি না, সে প্রশ্ন উঠতে পারে। কভিডকালে অভ্যন্তরীণ রুটেও যাত্রী বেড়েছে। টিকিটের ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এসব রুটে উড়োজাহাজ চলছে আসন খালি রেখেই। যেহেতু জ্বালানির দাম কমেছে, সেহেতু বলা যায় ভাড়াও কমানো হবে এবং অচিরেই তা কার্যকর হবে অন্যান্য রুটেও।
জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থা। প্রায়ই গণমাধ্যমে খবর আসে এটির আয় কমে আসছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী সংসদেও এ তথ্য দিয়েছেন।
অস্বচ্ছতা ও জবাবদিহি না থাকায় বিমান লোকসান করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, স্টেশনের কর্মকর্তারাই টিকিট সংগ্রহ করতে আসা যাত্রীদের নানাভাবে নিরুৎসাহিত করছেন। যাত্রীরা টিকিট না পেয়ে হয়ে অন্য এয়ারলাইনসের টিকিট কেনেন। এরপর আসন খালি নিয়ে বিমান উড়াল দেয়। তাই নিজেদের লোকসানের দায় জনসাধারণের ওপর চাপানোর সুযোগ নেই। জনগণের করের টাকায় পরিচালিত হচ্ছে বিমান। সেটির লোকসানের ভার বইতে হবে জনগণকে, আবার টিকিটের দাম কমানোর সুফল পাবে না তারা। এটি ন্যায্যতার কথা হলো না। ফুয়েলের দাম কমানোয় বিমানের ব্যয়ও কমবে। তাই যাত্রীসাধারণ যাতে উড়োজাহাজের জ্বালানির দাম কমার সুফল পান, সে লক্ষ্যে ভাড়াও কমিয়ে আনতে হবে। ফুয়েলের দাম কমায় উড়োজাহাজের ভাড়াও সমন্বয় করা উচিত।