শেয়ার বিজ ডেস্ক : উত্তর কোরিয়ায় গোপনে তেল রফতানি করার অভিযোগে চীনের ওপর নাখোশ হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প জানান, চীন এবার হাতেনাতে ধরা পড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তেল রফতানি অনুমোদন করলে উত্তর কোরিয়া সমস্যার বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধান সম্ভব নয়। চীন অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা উত্তর কোরিয়ার ওপর জাতিসংঘের তেল রফতানি-সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা কোনোভাবেই অমান্য করছে না। খবর সিএনবিসি।
দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সংবাদপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে ট্রাম্প এই অভিযোগ করেছেন। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন গোপনে ট্যাঙ্কারে করে উত্তর কোরিয়ার সমুদ্রে থাকা জাহাজগুলোতে তেল সরবরাহ করছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদপত্রটি জানায়, গত অক্টোবর থেকে অন্তত ৩০ বার মার্কিন গোয়েন্দাদের ভিডিওতে ধরা পড়েছে যে, সমুদ্রে জাহাজ থেকে অবৈধভাবে তেল সরবরাহ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত করে কিছু না জানালেও দেশটির পররাষ্ট্র বিভাগ রয়টার্সের বরাত দিয়ে জানায়, অবৈধভাবে এক জাহাজ থেকে অন্য জাহাজে পণ্য আদান-প্রদান এখনও বন্ধ হয়নি। আর এটি উত্তর কোরিয়ার ওপর বলবত থাকা জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন।
অন্যদিকে উত্তর কোরিয়ার প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার চীন বরাবরই বলে আসছে, পুরো বিষয়টি আসলে জাতিসংঘকে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে উসকানোর নতুন মার্কিনি ফন্দি।
জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক মাসগুলোয় উত্তর কোরিয়া তার পারমাণবিক কর্মসূচি ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা অব্যাহত রাখলে কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়ার ওপর আরও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ। দেশটিতে প্রতি বছর সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ ব্যারেল তেলপণ্য বিক্রির সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সর্বশেষ এই অবরোধের আওতায় নভেম্বরে উত্তর কোরিয়া থেকে লৌহ, কয়লা ও পারদ আমদানি করেনি চীন।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আরোপিত সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ বলে মনে করছে উত্তর কোরিয়া। গতকাল রোববার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ দাবি করে নিষেধাজ্ঞায় সমর্থনকারীদের শাস্তির হুমকিও দেওয়া হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র তাদের পরমাণু শক্তি দেখে ভয় পেয়েছে, তাই আমাদের দেশের ওপর কঠিন নিষেধাজ্ঞা ও চাপ সৃষ্টির জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।’ নতুন প্রস্তাব উত্তর কোরিয়ার ওপর পুরোপুরি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার শামিল।
এতে আরও বলা হয়, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের অনুসারীদের পাতানো এ নিষেধাজ্ঞাকে আমাদের সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবে গণ্য করি। এটা কোরীয় উপদ্বীপ ও এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা ভঙ্গ করে। স্পষ্টভাবে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছি।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এক সেকেন্ডের জন্যও ভুললে চলবে না, উত্তর কোরিয়া তার দেশের মূল ভূখণ্ডে পরমাণু হামলা চালাতে সক্ষম।’ এতে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবে সমর্থনকারীদেরও পিয়ংইয়ংয়ের ক্রোধের শিকার হতে হবে। বলা হয়, ‘যেসব দেশ প্রস্তাবের পক্ষে হাত তুলেছে তাদেরও এই নিষেধাজ্ঞার পরিণতি ভোগ করতে হবে।’