নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৪-২৫ সালের বাজেট পাস-পরবর্তী পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখী দেখা দিয়েছে। বাজেট পাশের পর টানা তিন কার্যদিবসে সূচক ছিল ইতিবাচক। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২৩ পয়েন্ট। এতে টানা তিন কার্যদিবসে সূচকে উত্থানে ডিএসইতে যুক্ত হয়েছে ১৬৯ পয়েন্ট। সূচকের তুলনায় লেনদেনের গতি কম হলেও তা ছিল ঊর্ধ্বমুখী ধারায়। অর্থবছরের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন ৫০০ কোটি টাকার নিচে নেমে এলেও গতকাল প্রায় ৮০০ কোটি টাকার কাছাকাছি লেনদেন হয়; যা গত ১৩ মে’র পর বাজারটিতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। যদিও বাজেটে মূলধনি মুনাফায় করারোপ, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হারের ব্যবধান কমানোয় অসন্তুষ্ট ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। টানা দরপতনের সময় প্রণোদনা না দিয়ে উল্টো করবোঝা বাড়ানোর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে বলে মতপ্রকাশ করেছিলেন শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্টরা।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখীর দেখা মিলে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে দাম বাড়ার তালিকা। ফলে সবকটি সূচকের বড় উত্থান দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৩৬৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩টি প্রতিষ্ঠানের। আর ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা ১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে। দিনের লেনদেনের বেশিরভাগ সময় এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দিনের সর্বোচ্চ দামে বিপুল পরিমাণ ক্রয়াদেশ আসে। বিপরীতে শূন্য হয়ে পড়ে বিক্রয়াদেশ। ফলে দিনের সর্বোচ্চ দামেই এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১২৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪৯৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৫১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিকে দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৭০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৩৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২৩১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। লেনদেন শুধু আগের কার্যদিবসের তুলনায় বাড়েনি, চলতি বছরের ১৩ মে’র পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।
এ লেনদেনে বেশি অবদান ছিল ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের ১৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৭ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑ আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, সাইফ পাওয়ার টেক, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, লাভেলো আইসক্রিম, বেস্ট হোল্ডিংস এবং মালেক স্পিনিং। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩০৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ২৪৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯৯টির দাম বাড়ে। বিপরীতে দাম কমে ৩১টির এবং ১৭টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।