নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বাজারগুলোতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের সবজির দামই বেড়েছে। দু-একটি ছাড়া বাকি সব সবজির দামই কেজিপ্রতি ৫০ টাকার ওপরে। সেইসঙ্গে অব্যাহত রয়েছে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধিও। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, রমজান পর্যন্ত দাম বাড়ার এই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।
গতকাল রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারগুলোতে বেগুন, টমেটো, কাঁচামরিচ, পটোল, করলা, পেঁপেসহ প্রায় সব ধরনের সবজির দামই কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। দাম বৃদ্ধি পাওয়া সবজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেগুনের দাম। সামনে আরও বাড়ার আভাস দিলেন বিক্রেতারা।
রায়েরবাগ কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা আবদুল মালেক বলেন, সামনে রোজা। রোজায় বেগুনের দাম সবসময় বাড়ে। কারণ চাহিদা আরও বেড়ে যায়। তাই এখন থেকেই দাম বাড়া শুরু হয়েছে। এই বিক্রেতা আভাস দিলেন, আসছে রমজানে প্রতি কেজি বেগুনের দাম একশ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচামরিচের দামও কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হওয়া টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়, ৪০ টাকার ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, ৪০ টাকার করলা ৫০ টাকায় এবং ৪০ টাকার শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা আবদুস সালাম বলেন, গত সপ্তাহে সারা দেশে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে অনেক সবজি নষ্ট হয়েছে। সেইসঙ্গে বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি বাজারে ঠিকমতো পৌঁছাতে পারেনি, নষ্ট হয়েছে। এসব কারণে সরবরাহ একটু কম। তাই দাম একটু বেড়েছে।
বিক্রেতাদের এসব যুক্তিতে সন্তুষ্ট নন ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, বিক্রেতারাই ইচ্ছা করে সংকট তৈরি করে দাম বাড়ায়। কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা রিফাত আহমেদ বলেন, প্রতি বছরই রমজানের সময় তারা দাম বাড়ায়। এবারও সেটাই করছে। তাদের সঙ্গে পারা যায় না। দাম বাড়লেও নিরুপায় হয়ে বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে।
এদিকে মুদিপণ্যের মধ্যে অব্যাহতভাবেই বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। গত সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকায় বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজ এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। বেড়েছে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও। ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, সামনের সপ্তাহে আরও বাড়তে পারে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম। খুচরা বিক্রেতা আল-আমিন বলেন, পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে, তাই খুচরা বাজারেও বেড়েছে। প্রতি বছরই এ সময়ে পেঁয়াজের দাম বাড়ে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
পেঁয়াজের পাশাপাশি বেড়েছে রসুনের দামও। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। আমদানি করা রসুনের দামও কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া চায়না রসুন এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। চিনির দাম কেজিতে তিন থেকে চার টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়। তবে ডাল, ছোলা, তেলসহ অন্যান্য মুদিপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
কিছুটা কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়।
এদিকে রমজানে চাহিদার শীর্ষে থাকা খেজুরের দামও এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল রয়েছে। এখনও রমজান উপলক্ষে খেজুরের কেনাবেচা তেমন একটা শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
ঊর্ধ্বমুখী সবজির বাজার, বেড়েছে পেঁয়াজ-রসুনের দাম
