ঋণখেলাপির ঝুঁকিতে যুক্তরাষ্ট্র 

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ফের ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ২০১১ সালের গ্রীষ্মে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ও একবার খেলাপির ঝুঁকিতে ছিল দেশটি। যদিও পরে দ্রুত সময়ে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকানরা সমঝোতায় এসে ঝুঁকি হ্রাস করে। তবে এবার যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ৩১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ঋণের সীমা না বাড়ালে, খেলাপি ঋণ আটকাতে নেয়া জরুরি ব্যবস্থাগুলো বন্ধ করে দেবে বলে জানিয়েছে ট্রেজারি বিভাগ। কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস (সিবিও) স্থানীয় সময় বুধবার এ শঙ্কার আভাস দিয়েছে। তারা বলছে, আগামী জুলাই এবং সেপ্টেম্বরের কোনো এক সময় কার্যকর হবে এ সিদ্ধান্ত। খবর: ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

সিবিও পরিচালক ফিলিপ সোয়াগেল বুধবার বিবৃতিতে বলেন, ‘চূড়ান্ত তারিখটি নির্ধারিত হবে এপ্রিলে। মে মাসে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিষেবা (আইআরএস) থেকে অর্থ আসবে। প্রত্যাশার চেয়ে যদি রাজস্ব কম আসে, তবে জরুরি ব্যবস্থাগুলো দ্রুত বন্ধ যাবে। এ ক্ষেত্রে জুলাইয়ের আগে ট্রেজারি তহবিল শেষ হয়ে যেতে পারে।’

পরবর্তী দশকে বার্ষিক ফেডারেল বাজেট ঘাটতির আকারের জন্য নিজের অভিক্ষেপও সংশোধন করেছে সিবিও। সংস্থাটির হিসাবে, সামনের ১০ বছরে মোট ঘাটতি দাঁড়াবে ১৮ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার; যা তাদের গত মে মাসে অনুমান করা ১৫ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলারের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি।

চলতি বছরের মধ্য জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র বর্তমান ঋণের সীমায় পৌঁছায়। এ সময়ে ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন একটি ধারাবাহিক পদক্ষেপের সূচনা করেছিলেন; যা ‘অসাধারণ ব্যবস্থা’ নামে পরিচিতি পায়। এই ব্যবস্থা সরকারকে তার বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য অর্থ ধার করার অনুমতি দেয়।

সিবিও পরিচালক সোয়াগেল বলেন, ‘কংগ্রেসে নতুন ঋণের সীমায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সই করার আগে যদি সেই ব্যবস্থাগুলো শেষ হয়ে যায়, তবে সরকারকে তার কিছু কার্যক্রমের জন্য অর্থ ছাড়তে বিলম্ব করতে হবে।’

এদিকে ক্যাপিটল হিলের শীর্ষস্থানীয় রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটরা বারবার জনসাধারণকে আশ্বস্ত করেছে যে ‘যুক্তরাষ্ট্র ঋণ খেলাপি হবে না’। শিগিগিরই সরকার একটি চুক্তিতে পৌঁছাবে এবং একটি সংকট এড়াতে সময়মতো বিল পাস করা হবে। রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত হাউস এবং ডেমোক্র্যাট-নিয়ন্ত্রিত সিনেটের ওপর নির্ভর করে করা হবে আইন। দেশটির নি¤œকক্ষে রিপাবলিকানদের একটি বড় অংশ কংগ্রেসের কাছে দাবি করেছে যে, তারা ঋণের সীমা বাড়ানোর জন্য ভোট দিতে রাজি হওয়ার আগে ফেডারেল খরচে কঠোরভাবে কাটছাঁট করবে। রিপাবলিকানদের যুক্তি, ঋণের সীমা এবং বার্ষিক ফেডারেল ব্যয় অবিচ্ছেদ্যভাবে সংযুক্ত। একইভাবে পারিবারিক ঋণ পরিবারের ব্যয়ের একটি অতিপ্রয়োজনীয় অংশ।

অন্যদিকের ডেমোক্র্যাটদের দাবি, সরকার কর্তৃক ব্যয় করা প্রতিটি ডলারের সিংহভাগ বাধ্যতামূলক ব্যয় যেমন সামাজিক নিরাপত্তা প্রদান বা জাতীয় ঋণের সুদের জন্য অর্থায়নে ব্যবহƒত হয়। এছাড়া ফেডারেল ব্যয় পারিবারিক বাজেটের মতো কাটছাঁট যায় না।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যদিও বাইডেন ঋণ খেলাপি হ্রাসে একাধিক শীর্ষ বৈঠক করেন।  আগামী মাসে আসন্ন বাজেটে ২ ট্রিলিয়ন ডলার ঘাতটি কমানোর  ঘোষণা দেন। 

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে মূল্যস্ফীতি। পণ্যের দাম বাড়ছে লাগামহীনভাবে। বিশেষ করে ডিমের ক্ষেত্রে। স্টোরগুলোতে ডিমের দাম বেড়েই চলেছে। দেশটির পরিসংখ্যান বিভাগের প্রকাশিত মূল্যস্ফীতির তথ্যে দেখা গেছে, জানুয়ারির আগের মাসের তুলনায় ডিমের দাম বেড়েছে। জানুয়ারিজুড়ে দাম বাড়ে ৭০ দশমিক এক শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি বার্ড ফ্লুর কারণে দেশটিতে ডিমের বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি মুরগির খাদ্যের দাম ও পরিবহন খরচও বেড়েছে। তাছাড়া কিছু ব্যবসায়ী সংকটকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে মূলত সবকিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু ডিমের দাম সবকিছু ছাড়িয়ে নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। দেশটিতে মাখনের দাম ২৬ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মার্জারিনের দাম বেড়েছে ৪৪ দশমিক ৭ শতাংশ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০