নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থপাচারের দিকে ইঙ্গিত করে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দেশের উচ্চ হারের খেলাপী ঋণ একটি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের সাধারণ মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে হয় আর্থিক খাত নিয়ে। ঋণের অর্থ কাজে না লাগিয়ে ভিন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) এক বিনিয়োগ সম্মেলনের বিজনেস সেশনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ‘আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন বাংলাদেশ’ ২০২১ শীর্ষক সম্মেলনের সোমবার ছিল শেষ দিন। ‘টেকসই প্রবৃদ্ধি-আর্থিক খাতের সেবা সমূহ’শীর্ষক সেশনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
এম এ মান্নান বলেন, ব্যাংকের প্রভিশন শর্টফলও একটি খরচ। এতেও ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপনায় খরচ হয়। দেশের উচ্চ পর্যায়ের খেলাপী ঋণ নিয়ে আামাদের জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। আমাদেরতো জনগনের সঙ্গে কথা বলতে হয়। উচ্চ হারের এই খেলাপী কমিয়ে গ্রহণযোগ্য মাত্রায় আনতে কার্যকর প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে। সক্ষমতার সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যবহার করতে হবে নীতি নির্ধারক পর্যায় থেকে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, সামাজিক খাতে বিনিয়োগ করার সময় হয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিরাপদ। যে সরকারই আসুক সকলের বিনিয়োগ নিরাপদ থাকবে। আমরা সরকারে না থাকলেও বিনিয়োগ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ফজলে কবির বলেন, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যথেষ্ট রয়েছে। ২০৩৫ সালে বাংলাদেশ ২৫তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবো। আর্থিক খাতের উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন (আইএফসি) এর আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক সেলমা রাসাভাপাক বলেন, বাংলাদেশ আর্থিক খাতের সংস্কারে মনোযোগ দিয়েছে। বিশেষ করে ব্যাংক দেউলিয়া আইন সংস্কারের কাজ শুরু করেছে। এখন বিনিয়োগ আকর্ষণে মনোযোগ দিতে হবে। বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের একটি ভালো জায়গা হতে পারে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বহুজাতিক এইচএস বিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেভিন গ্রিন বলেন, বাংলাদেশের পঁঞ্চ বার্ষিকি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রয়োজন। সরকারের পরিকল্পনায় সেই কথা উল্লেখ করা আছে। এজন্য টেকসই অর্থায়ন প্রয়োজন। বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়ছে। এতে বুঝা যায় নতুন মধ্যবিত্ব শ্রেণীর জন্ম হচ্ছে। যেকোনো দেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণীই বেশি ভোগ করে। বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের এ বিষয়ে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। এইচএসবিসি এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও বিনিয়োগ তথ্য দিতে পারি। সুযোগটি কাজে লাগানোর মতো।
স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশ শাখার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেশনে আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার।
সোমবার শেষ হওয়া বিনিয়োগ সম্মেলনটির উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটির আয়োজন করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(বিডা)। সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি, দেশে কার্যরত বিদেশি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। এতে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, চীন, জাপান, ভারতসহ বিশ্বের ১৫টি দেশের দুই হাজার ৩৩৫ জন নিবন্ধন করেছে।