ঋণ প্যাকেজের শর্তে ছাড় দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা মহামারিতে অর্থনীতি সচল রাখতে ব্যবসায়ীদের ঋণ প্যাকেজ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ঋণ প্যাকেজ বাস্তবায়ন করতে এবং অধিকসংখ্যক ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিতে কয়েকটি শর্তে ছাড় দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ঋণ পরিশোধে আরও সময় পেলেন তারা।

গতকাল ব্যাংকগুলোকে এমন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে ঋণ প্যাকেজ থেকে কোনো গ্রাহককে ঋণ প্রাপ্যতার সমপরিমাণ অর্থ তিন বছরের মধ্যে কয়েক কিস্তিতে দিতে পারবে ব্যাংকগুলো। তবে কোনো অবস্থায় ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের ৩০ শতাংশের বেশি ঋণ দেওয়া যাবে না। সাধারণভাবে ঋণের মেয়াদ হবে এক বছর।

জানা গেছে, ঋণ প্যাকেজ থেকে যেন অধিক সংখ্যক প্রতিষ্ঠান সুবিধা পায় সেজন্য এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের ভিত্তিতে ঋণ প্রাপ্যতার সমপরিমাণ অর্থ তিন বছরের মধ্যে কয়েকটি কিস্তিতে প্রদান করা যাবে। অর্থাৎ ঋণের অর্থ ব্যাংকগুলো একসঙ্গে গ্রাহককে না দিয়ে প্রতি বছর ভাগ করে দিতে পারবে।

এতে ব্যাংকের সুবিধা হবে সবচেয়ে বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শর্ত অনুযায়ী কোনো প্রতিষ্ঠানকে তার মূলধনের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ ঋণ দেওয়া যাবে। প্রতিষ্ঠানগুলো একসঙ্গে এটি চেয়েছিল। করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় ৩০ হাজার কোটি টাকা তহবিল গঠন করা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে টাকা জোগানোর জন্য। এই তহবিল থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা ৯ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবে। তবে তাদের চার দশমিক পাঁচ শতাংশ সুদ পরিশোধ করতে হবে, বাকি চার দশমিক পাঁচ শতাংশ সুদ সরকার ভর্তুকি হিসেবে দেবে।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের ভিত্তিতে প্যাকেজের আওতায় গ্রাহক পর্যায়ে প্রতিটি ঋণ সীমা ও মেয়াদ-সংক্রান্ত বিষয়াবলি বর্ণিত রয়েছে। আলোচ্য প্যাকেজের আওতায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অধিকসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ঋণ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে গতিশীল ও পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত অধিকসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ প্যাকেজের আওতায় সাধারণভাবে ঋণগ্রহীতা/গ্রাহক পর্যায়ে প্রতিটি ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ এক বছর। ঋণ/বিনিয়োগের প্রাপ্যতার সমপরিমাণ অর্থ কোনো গ্রাহকের অনুকূলে এক বছরে প্রদান করা সম্ভব না হলে অবশিষ্ট প্রাপ্য অর্থ আলোচ্য প্যাকেজের অবশিষ্ট মেয়াদের মধ্যে ঋণ হিসেবে প্রদান করা যাবে।

বিদ্যমান ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতা/গ্রাহক পর্যায়ে মোট ঋণ/বিনিয়োগের পরিমাণ কোনোভাবেই ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখভিত্তিক ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ মঞ্জুরীকৃত/প্রদত্ত সীমার ৩০ শতাংশের বেশি হবে না। তাছাড়া নতুন ঋণগ্রহীতার ক্ষেত্রেও বিদ্যমান নীতিমালার আওতায় ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ প্রাপ্যতা সীমার ৩০ শতাংশের অধিক হবে না।

ব্যাংক কর্তৃক কোনো ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতাকে যেভাবেই ঋণ/বিনিয়োগ প্রদান করা হোক না কেন (এককালীন অথবা প্যাকেজের মেয়াদে একাধিক বছরে প্রদত্ত হয়ে থাকলে) একজন গ্রাহকের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক এ সার্কুলার লেটারের অনুচ্ছেদ ২(খ)-এ বর্ণিত মোট সীমার মধ্যে প্রদত্ত ঋণ/বিনিয়োগের ওপর সুদ/মুনাফা ভর্তুকি প্রাপ্য হবেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০