নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে এক নাগরিক পদযাত্রায় এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংককে (এআইআইবি) কয়লা ও গ্যাসভিত্তিক জ্বালানিতে বিনিয়োগ থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য জ্বালনিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের বিভিন্ন নেতা। গতকাল শনিবার নগরীর বহদ্দারহাট পুলিশ বক্সের চত্বরে আয়োজিত নাগরিক পদযাত্রায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন আইএসডিই বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও ক্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন। এছাড়া চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ জানে আলম, চান্দগাঁও পাবলিক ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ইসমাইল ফারুকী, বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি আবু হানিফ নোমান প্রমুখ।
বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান আইএসডিই বাংলাদেশ, ক্লিন এবং বিডব্লিউজিইডির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, এআইআইবি প্রতিষ্ঠার প্রথম তিন বছরের মধ্যে যত অর্থ বিনিয়োগ করেছে, তার মধ্যে ২০ শতাংশ বিনিয়োগই কয়লা এবং এলএনজিভিত্তিক জ্বালানি প্রকল্প। চট্টগ্রামে এআইআইবি বেশ কয়টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে এবং আরও কিছু পরিকল্পনায় রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং দ্রুত গতিতে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য এই কয়লা ও গ্যাসভিত্তিক জ্বালানির ব্যবহারই অন্যতম দায়ী। এআইআইবি ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশে অবকাঠামো ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে।
বক্তারা আরও বলেন, পরিসংখ্যানে জানা যায়, ২০২২ সাল পর্যন্ত ৫১ কোটি ডলার শুধু জ্বালানি খাতেই বিনিয়োগ করেছে এআইআইবি। তারা শুধু বিনিয়োগ করে না, আমাদের পারামর্শও দিয়ে থাকে। এই পরামর্শ আবার তাদের লাভের স্বার্থেই দেয়। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এসে বিদ্যুৎ খাতে দুটি প্রকল্পে ২৭৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ৫৮৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কম্বাইন্ড সাইকেল গ্যাস টারবাইন এবং বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য ১৬৫ মিলিয়ন ঋণ অনুমোদন করেছে, যার একটি হলো উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ক্ষমতার সম্প্রসারণ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে দূষণকারী ও ব্যয়বহুল প্রকল্প।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় বাংলাদেশকে আর ডলার সংকটের দিকে ঠেলে না দেয়ার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২০৪১ সালের মধ্যে ১৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে, যেখানে ২০১৩ সালে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল ১৩৯ কোটি ডলার, ২০২২ সালে সেটা ২০২২ সালে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১১৫ কোটি ডলার। দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ৮২ শতাংশই গ্যাস, কয়লা ও ডিজেলভিত্তিক এবং এর অধিকাংশই আমদানিনির্ভর। পিডিবি ২০২১-২২ অর্থবছরে বিদ্যুৎকেন্দ্র ভাড়া দিতে হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে আমদানি করা ৭৪৬ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। স্পট মার্কেটে দাম বাড়ায় সেটির আমদানি সীমিত করেছে সরকার। আশঙ্কার বিষয় হলো এ বছরই এলএনজি আমদানিতে সরকারকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে।
০০০০০০০০০০