এইচএস কোডের ভুলে ৪০০% জরিমানা, ব্যবসায়ীরা হয়রানি হচ্ছেন: ডিসিসিআই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেছেন, পণ্যের বিবরণ সঠিক থাকলেও এইচএস কোড ভুল থাকার কারণে কাস্টমসে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীদের অনেক সময় হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়। এক্ষেত্রে পণ্যের বিবরণ এবং এইচএস কোডের যে কোনো একটি সঠিক থাকলে কাস্টমস আইন, ২০২৩-এর ৮৬ (১) ধারা সংশোধন করে অ্যাসেসমেন্ট পর্যায়ে দাখিলকৃত পণ্য ঘোষণার সংশোধন ও প্রত্যাহারের সুযোগ প্রদান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ডিসিসিআইর প্রতিনিধিরা। এ সময় সভাপতি আশরাফ আহমেদ চেয়ারম্যানের প্রতি এই আহ্বান জানান।

ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, দেশের জটিল রাজস্ব কাঠামোর জন্য আমাদের কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের উদ্যোক্তারা ব্যবসা পরিচালনায় নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। তাই এ খাতের উদ্যোক্তাদের বিকাশে সহায়ক এবং সহজ রাজস্ব কাঠামো প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিদ্যমান করহার না বাড়িয়ে, করজাল সম্প্রসারণের কথাও বলেন তিনি। তিনি জানান, বর্তমান আইনে ব্যবসায়িক ক্ষতিকে অন্যান্য ব্যবসায়িক উৎসের আয়ের সঙ্গে সমন্বয় করতে না পারলে ব্যবসায়ীদের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা আরোপিত হচ্ছে। এ লক্ষ্যে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ধারা ৩৭-এর অনুরূপ বিধান পুনঃবহালের প্রস্তাব করেন। কর প্রদান ও কর-সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি সহজীকরণের লক্ষ্যে আয়কর ব্যবস্থাকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসার ওপর জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি। উৎসে করকে এ মুহূর্তে অগ্রিম করের কিস্তির সঙ্গে সমন্বয় করা না হলে এমএসএমই কর্তৃক প্রদানকৃত পণ্য ও সেবার পরিশোধকৃত অর্থের থেকে কর্তনকৃত উৎসে করকে পরবর্তী কর বছরে আয়করের সঙ্গে ক্যারি-ফরওয়ার্ড করার সুযোগ প্রদানের বিধান রাখার আহ্বান জানান সভাপতি।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের মোট জনগোষ্ঠীর মাত্র ৫ শতাংশ লোক রাজস্ব প্রদান করে, যেখানে ভারতে এ হার ২৩ শতাংশ। বিদ্যমান বাস্তবতায় রাজস্ব আহরণের হার বাড়াতে নিজেদের করজাল সম্প্রসারণের কোনো বিকল্প নেই বলে তিনি অভিমত জ্ঞাপন করেন। আমাদের মোট রাজস্বের সিংহভাগই আসে বিদ্যমান করদাতাদের কাছ থেকে এবং সমাজের একটি বড় অংশই করজালের বাইরে থেকে যাচ্ছে। ফলে চাপ বাড়ছে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর। এতে করজাল সম্প্রসারণ করা সম্ভব না হলে বিদ্যমান করদাতারা কর প্রদানে নিরুসাহিত হবেন। তাই করজাল সম্প্রসারণে এনবিআর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগামী ৬ মাস কাজ করবে। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন স্তরে কর আহরণের কারণে বিশেষ করে করপোরেট করের ইফেক্টিভ হার বেড়ে যায়।

বিষয়টি এনবিআর গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। সামগ্রিক রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা না কমিয়ে, করহার যৌক্তিকীকরণের পাশাপাশি দেশের রাজস্ব ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজানো হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। ব্যবসায়িক লেনদেন প্রক্রিয়া ক্যাশলেস ও ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে সম্পন্ন করার জন্য ব্যবসায়ী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। যার মাধ্যমে কর আহরণের হার আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি রাজস্ব খাতের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিতকরণের পাশাপাশি সমাধানের লক্ষ্যে ডিসিসিআইকে প্রয়োজনীয় গবেষণা পরিচালনা পূর্বক সুপারিশ পেশের আহ্বান জানান, যা এনবিআরকে যৌক্তিক পদক্ষেপ গ্রহণে সহযোগিতা করবে বলে মত প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে এনবিআর প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে।

ঢাকা চেম্বার ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহসভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী, এনবিআর সদস্য (শুল্কনীতি) মো. মাসুদ সাদিক, সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জি এম আবুল কালাম কায়কোবাদ প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০