এইচ-১বি ভিসা বিতর্কে ভারত ও মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উদ্বেগ

শেয়ার বিজ ডেস্ক: এইচ-১বি ভিসা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কাড়াকড়ি প্রস্তাব এবং প্রস্তাব ঘিরে জল্পনায় এমনিতেই সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে, সম্প্রতি প্রকাশিত একটি রিপোর্ট, যাতে ভারতীয়দের তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের, মার্কিন ভিসা পাওয়ার হার কমে গেছে বলা হয়েছে। এই ত্রিমুখী আক্রমণেই এখন কিছুটা দিশহারা ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। খবর আনন্দবাজার।
গত মঙ্গলবারই ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেসের ডিরেক্টর ফ্রান্সিস সিসনা জানান, এইচ-১বি ভিসা নিয়ে কড়াকড়ির কথা তো ট্রাম্প প্রশাসন ভাবছেই। তার ওপর ওই ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া কর্মীদের স্বামী বা স্ত্রীর কাজের সুযোগ বন্ধেরও ভাবনা রয়েছে তাদের। তার জন্য কঠোর হবে এইচ-৪ ভিসার নিয়মও। আর এ ঘোষণাতেই চিন্তার ভাঁজ দুদেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের কর্তাব্যক্তিদের কপালে। গত বুধবার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৭-তে সালে প্রথম সারির সাতটি ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের এ ভিসা পাওয়ার সংখ্যা কমেছে ৪৩ শতাংশ। ফলে ঘুম নেই সংশ্লিষ্ট শিল্পের কর্মীদের।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশে ভিসার এ চোখরাঙানিতে ভারতে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ধাক্কা খেতে পারে বলে শঙ্কিত দেশটির সংগঠন ন্যাসকম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কগনিজ্যান্টের এক কর্তা জানান, ভিসার সমস্যায় দক্ষ কর্মী পাওয়াই এখন দুষ্কর। তার ওপরে স্ত্রী বা স্বামীর কাজের সুযোগ বাতিলের প্রস্তাব সমস্যা আরও জটিল করে তুলছে। তার দাবি, আগে বিদেশে প্রকল্পের শরিক হওয়ার যে আগ্রহ ছিল, এখন তা নেই। উল্টে বিদেশ পাঠানোর প্রস্তাব দিলে, কর্মীরা চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন। অথচ চাকরি, এমনকী ‘বিয়ের বাজারে’ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের সমাদরের অন্যতম কারণ ছিল বিদেশযাত্রা।
টেক মহিন্দ্রার প্রাক্তন এক কর্মী জানান, তিন বছরের প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভিসার ডামাডোলে স্ত্রীর কাজের সম্ভাবনা ক্ষীণ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়ে দেশে ফিরেছেন।
বুধবার প্রকাশিত ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর আমেরিকান পলিসির প্রতিবেদনে বলছে, ২০১৭ মার্কিন অর্থবছরে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর আট হাজার ৪৬৮টি ভিসা মঞ্জুর হয়েছে। ২০১৫ সালের তুলনায় যা ৪৩ শতাংশ কম। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম ছুটেছে তাদের।
ইনফোসিস, কগনিজ্যান্ট, টিসিএস, আইটিসি ইনফোটেকের মতো সংস্থার মতে, ভিসা কম মঞ্জুর হওয়া এবং তাকে ঘিরে অনিশ্চয়তা ছায়া ফেলছে চাকরির বাজারেও। মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞদের মতে, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে আগ্রহ হারাচ্ছেন প্রকৌশলীরা। উপদেষ্টা সংস্থা কেলি সার্ভিসেসের দাবি, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের চেয়ে এখন পাল্লা ভারী গাড়ি শিল্পের মতো উৎপাদন ক্ষেত্রের।
প্রভাব পড়েছে মাইক্রোসফট, ফেসবুক, গুগলের মতো মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোও। তাদের মতে, এইচ-৪ ভিসার অনেক কর্মীরই পড়াশোনা প্রচুর। তারা দক্ষ। তাই প্রস্তাব কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষ কর্মী অনেকটা কমে যাবে। একমত পোষণ করেছেন বেশ কয়েকজন মার্কিন কংগ্রেস সদস্যও।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০