নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। শুধু তা-ই নয়, কোনো আলোচনায়ও বিএনপি যাবে না। একমাত্র নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে, তখন আলোচনা হতে পারে। তার আগে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘অন্তরে মম শহীদ জিয়া’ নামের একটি সংগঠনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
সবার স্বার্থ রক্ষা করার জন্য এই অনির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে দিতে হবে বলে মন্তব্য করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি এটাকে সরকার বলি না। সরকার হয় কখনÑযখন জনগণের ভোটে কেউ নির্বাচিত হয়, তখন জনগণের সরকার বলা হয়। আজকের বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দল কিন্তু সরকার পরিচালনা করছে না। এটা একটি রেজিম। এখানে কতগুলো দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী, দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তঅসহ তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটা রেজিম সৃষ্টি করা হয়েছে। একটা রেজিমের মাধ্যমে আজকে বাংলাদেশের মানুষের সব অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছে।’
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার অভিযোগ তুলে বিএনপির এ নেতা বলেন, এ দেশে মানুষের ধর্মকর্ম করার যে অধিকার, সেটাও তারা কেড়ে নিয়েছে। এরই মধ্যে তারা বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। মানুষের আইনের শাসন কেড়ে নিয়েছে। বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের সর্বস্তরের অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, কোনো সভ্য দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বলে আলোচনা করার অর্থই হচ্ছে সেই দেশের সমাজব্যবস্থা ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে বড় ধরনের সমস্যা হয়েছে। বাংলাদেশে কিন্তু সেই সমস্যাটা আজকে সৃষ্টি হয়েছে। এ সমস্যা সৃষ্টির পেছনে মূলত যে দলটি কাজ করছে, সেটি হচ্ছে আওয়ামী লীগ।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘এরা মুখে প্রতিনিয়ত যে কথা বলে, এরা কাজ করে ঠিক বিপরীত। হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজার অনুষ্ঠানকে যেভাবে তারা ভণ্ডুল করেছে, যেভাবে ধ্বংস করেছেÑএই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশে বড় ধরনের সামাজিক বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বে আমাদের মুখ ছোট হয়ে গেছে। আমাদের মাথা নত হয়ে গেছে আজকে।’
বিএনপি বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে দেবে না বলে মন্তব্য করে আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, গত ৯ বছরে হিন্দু সম্প্রদায়ের তিন হাজারের বেশি মানুষের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে, কোনোটির বিচার হয়নি। আজকের ঘটনারও তারা বিচার করতে চাচ্ছে না। বরং এ ঘটনার মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে বিরোধীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের কাজ অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে আগামী দিনের বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর বিএনপির দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, অন্তরে মম শহীদ জিয়া নামের সংগঠনটির উপদেষ্টা ঢালী আমিনুল ইসলাম, জহির উদ্দিন প্রমুখ।