Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 12:03 pm

একই গাছে দুই প্রজাতির ফল!

শেরপুরের কৃষি জাদুকর খ্যাত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কাশেম এবার কলম পদ্ধতিতে এক গাছে দুই প্রজাতির ফল ফলিয়ে এলাকায় চমক সৃষ্টি করেছেন। তার এ পদ্ধতির গাছের চারা ইতোমধ্যে রাজধানীর কৃষি মেলায় প্রদর্শিত হয়েছে।
জানা গেছে, শেরপুরের শ্রীবর্দী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আবুল কাশেম শহরের কসবা মহল্লায় বেশ কয়েক বছর আগে মাত্র ৩৫ শতক জমিতে বসতবাড়িসহ শতাধিক বিভিন্ন ফলজ গাছ ও সবজি বাগান গড়ে তুলেছেন। বাণিজ্যিকভাবে টবের মধ্যে তিনি বিভিন্ন প্রজাতির ফল গাছের চারা তৈরি ও বিভিন্ন মৌসুমের সবজি চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হয়েছেন।
এবার তিনি একটি আম গাছের পৃথক ডালে কলম পদ্ধতিতে আমেরিকান ক্যান্ট, হাঁড়িভাঙ্গা, আম্রপলি, ফজলি ও মল্লিক আম ফলিয়েছেন। ওই গাছের বিভিন্ন শাখায় মুকুল শোভা পাচ্ছে। এছাড়া তিনি এক গাছে জাম্বুরা ও কমলা, বেগুন ও চমেটো, সাদা ও কালো কাঁচা মরিচ ফলিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন। এসব দৃশ্য দেখেতে স্থানীয় এলাকাবাসী ও শহরের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন আসছেন। সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত কৃষি মেলায় বিএডিসি তার কাছ থেকে টমেটো ও বেগুনের চারা নিয়ে গেছে প্রদর্শনের জন্য।
উল্লেখ্য, কাশেমের মাত্র ৩৫ শতক জমির ওপর ১০ প্রজাতির ১০টি আম, চার প্রজাতির ১৩ লিচু, পেঁপে ৯টি, দুই প্রজাতির জামরুল তিনটিসহ একাধিক পেয়ারা, জলপাই, কাঁঠাল, জাম, সুপারি, আপেল কুল, আমড়া, চালতা, লেবু, কলা, জাম্বুরা, দেশি আতা ফল, সবেদা, কমলা, মাল্টা ও আঙ্গুর গাছ রয়েছে। এসব গাছের প্রায় সবগুলোয় মৌসুম অনুযায়ী ফলন ধরছে। উল্লেখিত ফলদ বৃক্ষের পাশপাশি সিম, লাউ, রশুন, পেঁয়াজ, হলুদ, গাজর, আদা, পুঁদিনা পাতা, ধনিয়া পাতা, লেটুস পাতাসহ বিভিন্ন সবজির বাগান করেছেন।
ফলমূল ও সবজি চাষের পাশপাশি তিনি বাড়ির ভেতরে প্রায় দুই শতক জমির ওপর ছোট্ট দুটি পুকুরে বিশেষ কায়দায় রুই, কাতলা, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন মাছের চাষও করছেন। তবে এ মাছ তিনি নিজের পরিবারের খাওয়ার পাশপাশি আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠজনদের মাঝেই বিতরণ করে থাকেন।
পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের মানুষ ও নিজের অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি অফিসে বিনামূল্যে বিতরণ করেন ফলমূল ও শাকসবজি। তবে কেউ কিনে নিতে চাইলে তার কাছে বাজারদরে বিক্রিও করেন। বর্তমানে তিনি শহরের অভিজাত বিভিন্ন চাইনিজ রেস্তোরাঁয় লেটুস পাতা, পুদিনা পাতা ও ধনিয়া পাতা চুক্তিভিত্তিকভাবে বিক্রি করছেন। কৃষিতে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য বিভিন্ন সময়ে কৃষিমেলা ও অন্যান্য মেলায় পুরস্কৃত হয়েছেন তিনি।
কাশেম জানায়, ফুল ও ফল গাছের প্রতি আলাদা ঝোক ছিল তার। তাই চাকরির ফাঁকে বাড়িতে ফল ও সবজির ব্যতিক্রমী চারা উৎপাদন করেছেন। আগামীতে নতুন কৌশলে টবের মধ্যে ফলদ গাছ রোপণ করে তা থেকে ফল উৎপাদনের চিন্তা রয়েছে তার। আগামীতে মানুষ যেন কম জায়গায় একাধিক ফল উৎপাদন করতে পারে সেই চেস্টা চালাবেন তিনি।
জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক
মো. আশরাফ উদ্দিন জানায়, অনেকে ব্যক্তি উদ্যোগে শখের বশে বাসাবাড়িতে জেনেটিক পদ্ধতিতে একই গোত্রের গাছের মধ্যে একই গাছে ভিন্ন সবজি ও ফল উৎপাদন করছেন।

এমএ রফিক