একই নম্বরে অপারেটর পরিবর্তনের সুবিধা দেবে ইনফোজিলিয়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক : মোবাইল ফোনের নম্বর অপরিবর্তিত রেখে অপারেটর বদল (এমএনপি) সেবার লাইসেন্স পাচ্ছে বাংলাদেশ ও স্লোভেনিয়ার কনসোর্টিয়াম ইনফোজিলিয়ন বিডি-টেলিটেক। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ।

তিনি বলেন, এমএনপি লাইসেন্সের জন্য ইনফোজিলিয়ন বিডি-টেলিটেককে নির্বাচিত করার পর গত ১৫ অক্টোবর সরকারের চ‚ড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া গেছে। এছাড়া লাইসেন্স অ্যাকুইজিশন ফি এবং কোম্পানি গঠনের জন্য ৩০ দিন সময় দিয়ে গত ১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটিকে নোটিস পাঠানো হয়েছে বলেও শাহজাহান মাহমুদ জানান।

ওই নোটিসে বলা হয়, এই কনসোর্টিয়ামকে এক মাসের মধ্যে লাইসেন্স ফি বাবদ ১০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ কোম্পানি গঠন করে বিটিআরসিকে জানাতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ইনফোজিলিয়ন বিডি-টেলিটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাবরুর হোসেন এবং ফরেন শেয়ারহোল্ডার টেলিটেক ডিওও সেøাভেনিয়ার প্রতিনিধি টমির হাতে লাইসেন্সের নোটিস তুলে দেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান।

বর্তমানে ৭২টি দেশে এ সেবা চালু রয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১৩ সালের জুন মাসে এ প্রকল্প অনুমোদন পাওয়ার চার বছর পর তার বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। এটি সরকারের একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য’।

এ সেবা চালু হওয়ার পর গ্রাহকরা ৩০ টাকা ফি দিয়ে নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তনের আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তার অপারেটর বদলে যাবে। আবার অপারেটর পরিবর্তন করতে হলে তাকে ৯০ দিন অপেক্ষা করতে হবে।

নম্বর পরিবর্তনের ঝক্কিতে যেতে চান না বলে সেবায় সন্তুষ্ট না হওয়ার পরও অনেকে এতদিন অপারেটর বদলাতে পারেননি। এমএনপি চালু হলে তারা নম্বর ঠিক রেখেই অন্য অপারেটরে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। ফলে অপারেটররাও তাদের সেবার মান উন্নত করতে চেষ্টা চালাবে বলে সরকার আশা করছে।

বহু প্রতীক্ষিত এই সুযোগ তৈরির জন্য ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রথম দফা এমএনপি নীতিমালা অনুমোদন করলেও তাতে লাইসেন্স প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে কি না সেই প্রশ্ন উঠলে নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

কয়েকটি মূল্যায়ন মানদণ্ড যুক্ত করে গতবছর জানুয়ারিতে এমএনপি নীতিমালার সংশোধিত খসড়া চ‚ড়ান্ত করে বিটিআরসি। জুন মাসে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চ‚ড়ান্ত অনুমোদন পায়।

এরপর নিলামের উদ্যোগ নিয়ে আবেদনকারী ছয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পাঁচটিকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়। ২০১৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর নিলামের তারিখও ঠিক করা হয়। কিন্তু তার সপ্তাহখানেক আগে নিলাম স্থগিতের ঘোষণা দেয় বিটিআরসি।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সে সময় জানান, আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে ‘গোয়েন্দা সংস্থার নিরাপত্তা ছাড়পত্র’ পাওয়ার পরই অপারেটর নিয়োগে নিলাম হবে। এরপর গতবছর নভেম্বরে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ জানান, নিলামের আগে নীতিমালার ‘প্রকিউরমেন্ট প্রসেস’-এ আরও কিছু পরিবর্তন আনা হবে।

আগের নীতিমালায় বলা হয়েছিল, লাইসেন্স দেওয়া হবে নিলামের মাধ্যমে। নিলাম প্রক্রিয়ায় আবেদন ফি এক লাখ টাকা, বিড আর্নেস্ট মানি ১০ লাখ টাকা এবং নিলামের ভিত্তিমূল্য হবে এক কোটি টাকা। কিন্তু ওই পদ্ধতি পরিবর্তন করে ‘বিউটি কনটেস্ট’-এর মাধ্যমে ‘যোগ্য’ একটি কোম্পানিকে চ‚ড়ান্ত করার নিয়ম যুক্ত করে চলতি বছর জুলাইয়ে আবারও পাঁচটি কোম্পানির কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করে বিটিআরসি।

বাকি চার প্রতিষ্ঠান হলো গ্রিনটেক লিমিটেড, ব্রাজিল-বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম, আরইভিই নম্বর লিমিটেড ও রয়েল গ্রিন লিমিটেড।

এই পাঁচ কোম্পানির মধ্য থেকে ইনফোজিলিয়ন বিডি-টেলিটেক কনসোর্টিয়ামকেই চ‚ড়ান্ত হিসেবে মনোনীত করে বিটিআরসির মূল্যায়ন কমিটি।

শর্ত অনুযায়ী, লাইসেন্স পাওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে ওই কনসোর্টিয়ামকে বাংলাদেশে এমএনপি সেবা চালু করতে হবে। দ্বিতীয় বছর থেকে আয়ের ১৫ শতাংশ দিতে হবে সরকারকে। এই লাইসেন্সের মেয়াদ হবে ১৫ বছর।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০