নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসা পরিচালনায় নির্দিষ্ট কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ নেই। সরকারি ১২টি সংস্থা ও অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে হয়। এতে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা। কোনো সমস্যা হলে তার প্রতিকার কোথায় পাওয়া যাবে তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। এমন দাবি করেছেন রেস্তোরাঁ মালিকদের সংগঠন।
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সম্মেলনে এমন দাবি করেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির নেতারা।
এক প্রশ্নের উত্তরে সংগঠনটির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, ‘দেশের রেস্তোরাঁগুলোকে ১২টি সংস্থা মনিটরিং করে। তাতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমন্বয়হীনতা, অযাচিত হস্তক্ষেপ ও বিড়ম্বনায় মুখে পড়তে হচ্ছে। যখন তখন হয়রানি করা হয়। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এক ধরনের নীরব চাঁদাবাজি চলছে। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়বে। ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, অবিলম্বে টাস্কফোর্স বা কমিশন গঠন করে একটি সংস্থার অধীনে রেস্তোরাঁগুলোকে আনা প্রয়োজন। অন্তত একটি স্টান্ডার্ড ঠিক করে দেয়া খুবই জরুরি। দীর্ঘদিন ধরে এতগুলো সংস্থার দ্বারা যে অরাজকতা চলছে, কারও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারকে বাস্তবায়ন না করার জন্য কোনো একটা পক্ষ ষড়যন্ত্র করে এ অবস্থা তৈরি করেছে। তাই অবিলম্বে টাস্কফোর্স বা কমিশন গঠন করে একটি সংস্থার অধীনে রেস্তোরাঁগুলোকে আনতে হবে।
ইমরান হাসান বলেন, আমাদের সেক্টরের ৯৫ শতাংশ কর্মী অদক্ষ, স্বল্প শিক্ষিত। তারা সমাজের অবহেলিত জায়গা থেকে এসেছে। তাদের কিছুটা প্রশিক্ষণ দিয়ে খাতটি চালানো হয়। তাদের আগে ট্রেনিং দেয়ার ব্যবস্থা করুন। আমাদের একটি পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন হিসেবে এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর) দিন। এভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোনো দিনই খাদ্যের মান ভালো করা যাবে না।
আসন্ন রমজানে আরও বড় খড়গ নামবে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়ে সমিতির মহাসচিব বলেন, বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে প্রতিবারের মতো এবারও রমজানে বিশাল খড়গ নেমে আসবে। আমরা পবিত্রতা রক্ষায় ইফতারি, সাহারিসহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য নিরাপদ করার জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক ও সচেতন থাকব। এ সময় ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে একটি পণ্যের যতটুকু মূল্যবৃদ্ধি হয়; তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি করছে এক শ্রেণির দেশীয় ব্যবসায়ীরা। এজন্য আমাদেরও বেশি দামে পণ্য কিনে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
কভিড-১৯ এ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাতের মধ্যে রয়েছে রেস্তোরাঁগুলো। তারপরেও আমরা না সরকারের কোনো প্রণোদনা পেয়েছি, না কোনো সাহায্য পেয়েছি। এখন আর সেটা চাই না, আমরা সরকারের কাছে এসএমই খাত থেকে স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ চাই।
অনুষ্ঠানে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি ওসমান গনি বলেন, দীর্ঘদিনের এসব ব্যবসায়ীকে রাস্তায় নামিয়ে দেবেন না। আমরা হয়রানি-প্রতিবন্ধকতা ছাড়া সঠিক সুন্দরভাবে ব্যবসা করতে চাই। সংগঠনটির প্রথম যুগ্ম-মহাসচিব ফিরোজ আলম সুমন বলেন, আমরা মোবাইল কোর্টের বিরুদ্ধে না, মোবাইল কোর্ট চলুক যৌক্তিকভাবে। মানবিকভাবে বিষয়গুলো দেখা হোক এবং আমাদের প্রতিনিধি রাখা হোক।