Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 10:16 am

একনেকে আট হাজার কোটি টাকার সাত প্রকল্প অনুমোদন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাত হাজার ৮৯০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৭টি নতুন ও সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে তিন হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য চার হাজার ১৩ কোটি টাকা। গতকাল অনুমোদনের জন্য ৮টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বাড়ানোসহ আধুনিকায়নে বিশ্ব ব্যাংকের সাহায্যপুষ্ট একটি প্রকল্প ফেরত দেয় একনেক। প্রকল্পটি সরকারের নিজস্ব তহবিলে বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদন পায়। সভায় একনেক সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব এবং সংশ্লিষ্ট সিনিয়র সচিব ও সচিবরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৈঠক শেষে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বাড়ানোসহ আধুনিকায়নে বিশ্বব্যাংকের অর্থ সহায়তার এ প্রকল্পটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে বাইরের দেশের কিংবা অন্য কাউকে জড়ানোটা সঠিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে না। এজন্যই এ জাতীয় বিষয়ে অন্য কাউকে অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে প্রকল্পটিতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন অন্য কোনো প্রকল্পে ব্যবহার করা যায় কি না সেটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ বিষয়ে কাজ করে সিদ্ধান্ত নেবে।

গতকাল অনুমোদিত হওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম শহরে পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাট ও ডরমিটরি ভবন নির্মাণে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪৭৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রকল্পটির মাধ্যমে চট্টগ্রাম সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসন সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য পর্যায়ক্রমে শতভাগ আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে এবং সরকারি পরিত্যক্ত সম্পত্তি যাতে বেদখল না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জেলায় জেলা রেজিস্ট্রি ও সাব রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ দ্বিতীয় পর্যায়’ শীর্ষক প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৩০৯ কোটি ৩৩ টাকা। এর পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে। বিদ্যমান জেলা রেজিস্ট্রি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলো অতি পুরোনো ও জরাজীর্ণ। ফলে অফিসগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আগত সেবাগ্রহীতাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ বিবেচনায় পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলা রেজিস্ট্রি ও সাবরেজিস্ট্রি অফিস বিদ্যমান নকশা ঠিক রেখে পর্যায়ক্রমে নির্মাণ করার পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।

চার হাজার ৯৮৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে শাহজালাল ফার্টিলাইজার প্রকল্প এসএফপি দ্বিতীয় সংশোধিত

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৯৯৮ কোটি এবং প্রকল্প সাহায্য তিন হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে। ‘আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন দ্বিতীয় পর্যায়’ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় এক হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম চতুর্থ পর্ব’ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ১১৫ কোটি ৮ লাখ টাকা। ন্যাশনাল সেন্টার অন জেন্ডার বেইজড ভায়োলেন্সের কার্যক্রম পরিচালনা করা ও জেন্ডার বেইজ ভায়োলেন্স বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, মনিটরিং, কস্টিং ও রিভিউ করার লক্ষ্যে প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।

চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলায় হালদা নদীর উভয় তীরের ভাঙন থেকে বিভিন্ন এলাকা রক্ষাকল্পে তীর সংরক্ষণ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২১২ কোটি টাকা। এর পুরোটাই আসবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। আর ‘গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ রাজশাহী জোন শীর্ষক প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৩৮ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।