Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 7:16 pm

একনেকে ৯ হাজার ৪৬০ কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৯ হাজার ৪৬০ কোটি ৯ লাখ টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। করোনা সংকটের মাঝেও সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। গতকাল রোববার বর্তমান সরকারের ৩৩তম একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। একনেক সভার সভাপতিত্ব করেন একনেকের চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনলাইনে ভার্চুয়ালি এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান যুক্ত ছিলেন। এছাড়া শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, সচিবরা সভায় অংশ নেন।

সভা শেষে দুপুরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান বলেন, ‘আমরা আজ একনেক সভা ভার্চুয়ালি করেছি। আমরা মোট ১০টি প্রকল্প একনেক সভায় পেশ করেছিলাম। সবগুলোই পাস হয়েছে। আজকে পাস হয়েছে ৯ হাজার ৪৬০ কোটি ৯ লাখ টাকা। এটা আনন্দের ব্যাপার আপনাদের জন্য, আমাদের জন্যও। সব টাকাই আমাদের নিজস্ব টাকা। কোনো ধার-দেনা, তথাকথিত সহায়তাÑএগুলো কিছুই নেই।’

সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার করোনাভাইরাসের মধ্যেও উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। তারপরও অন্ততপক্ষে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, ধারাবাহিকতটা বজায় রেখে উন্নয়নের মূল গতিটা ধরে রাখার। যে কারণে আমরা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’

প্রধানমন্ত্রী ও একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা সংক্ষিপ্ত ভাষণে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশবাসীর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর পুনরায় গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘দেশবাসীকে আমি এই অনুরোধ করব যে, সবাই স্বাস্থ্যবিধিটা মেনে চলবেন। কারণ জীবন চলতে থাকবে, এটি স্থবির থাকতে পারে না। তারপরও স্বাস্থ্যবিধিটা মেনে চলার জন্য সবাইকে আমি আহ্বান জানাব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বেই আজ এই সমস্যাটা চলছে। কাজেই এর হাত থেকে মুক্তি পেয়ে মানুষ যাতে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে সেটাই আমরা চাই।’ তার সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সাবেক ও বর্তমান সাংসদসহ দেশে এবং প্রবাসে করোনাভাইরাসের কারণে মৃত্যুবরণকারী বাংলাদেশীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন তিনি এবং এর কবল থেকে সবার মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেন।

একনেক সভায় অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলোÑ হাওর অঞ্চলে টেকসই পানি সরবরাহ স্যানিটেশন ও হাইজিন ব্যবস্থার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প। ব্যয় ৫৫৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা; জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প। ব্যয় ১১৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা; ‘মনু নদীর ভাঙন থেকে মৌলভীবাজার জেলা সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলা রক্ষা’ প্রকল্প। ব্যয় হবে ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা;  ‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩’। ব্যয় ৬ হাজার ৪৭৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা; ‘বৃহত্তর পটুয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ (পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা) প্রকল্প। ব্যয় ১৬৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা; ‘জামালপুর জেলা কারাগার পুনর্নির্মাণ’ প্রকল্প। ব্যয় ২১০ কোটি টাকা; ‘গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নতকরণ (চট্টগ্রাম জোন) প্রকল্প’। ব্যয় ২৫৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা; ‘টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ (হরিদাসপুর)-মোল্লাহাট (ঘোনাপাড়া) আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্প। ব্যয় ৬১২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা; ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের ১০০টি মিটার গেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ পুনর্বাসন (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প। ব্যয় ৭৮ কোটি ১২ লাখ টাকা এবং ‘বিএএফও বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ, যশোর (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্পটি ব্যয় না বাড়িয়ে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।