নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি আমন মৌসুমে সরকার মোটা চালের দাম আর বাড়াবে না উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী মোটা চালের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
সচিবালয়ে গতকাল বুধবার বাংলাদেশ চালকল মালিত সমিতি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী খুচরো বাজারে মোটা চালের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা সফল হবে না।’
কামরুল ইসলাম বলেন, মোটা চালের সরকারি দাম ৩৩ টাকা। কিন্তু কেজিতে এই চালের দাম বেড়েছে দুই থেকে আড়াই টাকা। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, ‘নিম পিরিয়ডে চালের দাম একটু বাড়ে। তবে এই দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আছে।’
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত বছর এ সময়ে ভারত থেকে আড়াই থেকে তিন লাখ মেট্রিক টন মোটা চাল আমদানি করা হয়েছে। কিন্তু এবার এ সময়ে মাত্র ৩৭ হাজার টন চাল আমদানি করায় মোটা চালের দাম একটু বেড়েছে।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘গত বছর শুল্ক ছিল না। কিন্তু এবার শুল্কারোপ করা হয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা চাল আমদানি করেনি। এজন্য আমাদের কৃষকদের লাভ হয়েছে। তারা চালের ন্যায্য দাম পেয়েছেন।’
কখনও এই শুল্ক প্রত্যাহার করা হবে না জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পাইকারি বাজারে দাম বাড়িয়ে চালের বাজার অস্থিতিশীল করতে চায়। আমরা সে সুযোগ দেব না। শুল্ক প্রত্যাহার হবে না। আমাদের দেশের কৃষকরা যাতে ভালো থাকেন, সে ব্যবস্থাই হয়েছে। ভারত থেকে মোটা চাল না
এলে আমাদের দেশের কৃষকরাই চাল উৎপাদনে বেশি আগ্রহী হবেন।’
চালের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে বলে সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে চালকল মিল মালিক সমিতি নেতাদের ডাকেন খাদ্যমন্ত্রী।
কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ‘বাস্তব চিত্র জানার জন্য মিল মালিকদের ডাকা হয়েছে। তারা তাদের মতামত দিয়েছেন।’
মিল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ জানান, ‘চালের সরকারি দাম ৩৩ টাকা। কিন্তু পাইকারি বাজারে বেশি দাম বাড়েনি। তবে খুচরো বাজারে ৫০ পয়সা বেড়েছে।’ চালের বাজার আর বাড়বে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ মৌসুমে আর মোটা চালের দাম বাড়বে না। চিকন চালের দাম এমনিতেই বাড়েনি। সেটি স্থিতিশীল আছে। ভারত থেকে মোটা চাল আসা বন্ধ থাকায় দাম একটু বেড়েছে। এতে কৃষকরা উপকৃত হয়েছেন।’
কামরুল ইসলাম জানান, ‘এবার আমাদের লক্ষ্য ছিল তিন লাখ মেট্রিক টন আমন চাল সংগ্রহ করা। সে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে অতিরিক্ত সংগ্রহ হয়েছে। ইতোমধ্যে তিন লাখ ২৬ হাজার মেট্রিক টন চাল ঘরে এসেছে। আরও চুক্তি হয়েছে চার লাখ ২৬ হাজার মেট্রিক টনের। মার্চ পর্যন্ত আমন সংগ্রহ চলবে।’
খাদ্যমন্ত্রী জানান, আগে একশ্রেণির ব্যবসায়ী ভারত থেকে ফ্রিস্টাইলে চাল আনতো। এখন আর সে সুযোগ নেই। আগামী জুনে বোরো রোপণ শুরু হচ্ছে। এরপর আর মোটা চালের সমস্যা থাকবে না। কৃষকরা তাদের ন্যায্য হিস্যা পাবেন। আমরা কৃষকের ক্ষতি হতে দেব না।
Add Comment