নিজস্ব প্রতিবেদক: একুশের অবিনশ্বর চেতনা ধারণ করে দুর্নীতিমুক্ত, শোষণহীন, গণতান্ত্রিক ও সুশাসিত বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল গণমাধ্যমে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এ আহ্বান জানায় সংস্থাটি। এতে উল্লেখ করা হয়, অধিকার আদায়ের যে মহান চেতনায় একুশে ফেব্রুয়ারির আত্মদান, তার মূলে রয়েছে বৈষম্য, শোষণ, অন্যায় আর ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে চিরজাগরূক সত্তার সংগ্রামী বহিঃপ্রকাশ। একুশ সব অন্যায়, অবিচার, শোষণ, বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রেরণা জোগায়। একুশের অবিনশ্বর এ চেতনা ধারণ করে দুর্নীতিমুক্ত, শোষণহীন, গণতান্ত্রিক ও সুশাসিত বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারিতে মহান ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে এদেশের আপামর জনগণ বারবার অন্যায়, অবিচার আর শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। একুশের পথ বেয়ে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীনতার গৌরবদীপ্ত সূর্যকে। হার না মানা দৃঢ়তায় অশুভকে রুখে দেয়ার প্রেরণা আমরা একুশ থেকে পাই। একুশ যেমন আবেগের, তেমনি সংগ্রাম ও দ্রোহের। যেকোনো অন্যায়, নিপীড়ন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং ন্যায়ের পক্ষে সমন্বিত প্রতিবাদের প্রেরণা একুশে ফেব্রুয়ারি। তাই একুশ হোক দুর্নীতি প্রতিরোধে অনন্য প্রেরণার উৎস।
দুর্নীতি একুশের চেতনার পরিপন্থী। সবাইকে সেই চেতনা ধারণ করে দুর্নীতি রুখে দেয়ার প্রত্যয় নিয়ে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, একুশের চেতনায় প্রিয় স্বদেশ হোক গণতান্ত্রিক, সুশাসিত, দুর্নীতিমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যমুক্ত। জাতি, ধর্ম, গোত্র, বর্ণ নির্বিশেষে চাই সবার ভাষা ও সংস্কৃতিচর্চার নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, একুশের চেতনা আর দৃপ্ত শপথের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল, দুর্নীতির সর্বব্যাপী বিস্তৃত অক্টোপাস সেই অর্জন ভূলুণ্ঠিত করছে। বৈষম্যহীন, শোষণহীন ও ভয়মুক্ত সমাজ বিনির্মাণের যে শপথ, তা বিনষ্ট করছে। দুর্নীতির ধারণা সূচকে দীর্ঘ এক দশক বাংলাদেশের প্রায় একই অবস্থানে আটকে থাকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আমাদের ধারাবাহিকভাবে দ্বিতীয় সর্বনিন্ম অবস্থান তারই প্রমাণ। ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর শূন্য সহশীলতা’র ঘোষণা সর্বোচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রকাশ হলেও এর প্রয়োগে ঘাটতি থাকায় বাস্তবে তা ঘোষণায় আটকে রয়েছে। বিশেষ করে এ ঘোষণা বাস্তবায়নের দায়িত্ব ও ক্ষমতাপ্রাপ্ত মহল ও প্রতিষ্ঠানগুলোয় দুর্নীতির যোগসাজশ, সহায়তা কিংবা সুবিধাভোগীদের প্রভাবে দুর্নীতির ব্যাপকতা ও গভীরতা লাগামহীনভাবে বাড়ছে। ফলে একুশের চেতনায় সুশাসিত স্বদেশ গড়ার সম্ভাবনা ধূলিসাৎ হচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার কার্যকর বাস্তবায়নে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বব্যাপী কঠোর ব্যবস্থা নেয়াই হবে একুশের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
