মানুষ সামাজিক জীব। পারস্পরিক সহযোগিতায় তার অগ্রগতি, পরহিতে প্রাণদানে তার স্থায়ী সুখ। রক্তদান সেই ব্রতেরই এক সুমহান কর্ম। বর্তমান বিশ্বে এর ব্যাপ্তি ও গভীরতা তাই আরও বেশি। কোনো ব্যক্তির স্বেচ্ছায় দেয়া রক্তের বিনিময়ে মুমূর্ষু রোগীর জীবন রক্ষা পায়।
রক্ত মানবদেহের একটি অপরিহার্য উপাদান। রক্তই জীবন। শরীরে রক্ত থাকলেই মানুষ থাকে সজীব ও সক্রিয়। শরীরে রক্তের স্বল্পতা দেখা দিলে টান পরে প্রাণশক্তিতে। তখনই প্রয়োজন হয় সুস্থ মানুষের কাছ থেকে রক্ত নেয়া।
তবে আমাদের দেশে স্বেচ্ছায় রক্তদানের বিষয়টি এখনও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। তবে পেশাদার রক্তদাতা অর্থের বিনিময়ে নিয়মিত রক্তদান করে থাকে। কিন্তু এসব পেশাদার রক্তদাতার রক্ত গ্রহণ খুবই ঝুঁকিপূণ। কেননা তাদের মধ্যে প্রায় সবাই নেশাগ্রস্ত এবং তারা বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনের অধিকারী মানুষকে রক্তদানে এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু রক্তদান সম্পর্কে অনেকের মধ্যে অমূলক ধারণা বিদ্যমান। রক্তদানের কথা শুনলে অনেকে ভয়ে চমকে ওঠে। অনেকে মনে করে রক্তদানে স্বাস্থ্যহানি ঘটে। এসব ধারণা নিতান্তই অমূলক। আমাদের দেহে প্রতিনিয়ত রক্ত তৈরি হচ্ছে এবং পুরোনো রক্ত অকেজে হয়ে পড়ছে। রক্ত না দিলেও স্বাভাবিক নিয়মে রক্তের অকেজো হয়ে যাওয়া কেউই ঠেকাতে পারবে না।
প্রতি তিন মাস অন্তর যে কোনো সুস্থ-সবল মানুষ রক্তদান করতে পারে। এতে স্বাস্থ্যহানির কোনো আশঙ্কা থাকে না। তাই এসব কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে এসে রক্তদানে উৎসাহী হতে হবে। তবে হ্যাঁ, রক্তদানে ও গ্রহণে দাতা ও গ্রহীতা উভয়কেই একই
গ্রুপের আওতাধীন হতে হবে। রক্তের গ্রুপ সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে জীবনহানিরও আশঙ্কা দেখা দেয়। তাই সঠিক উপায়ে সবকিছু জেনে-বুঝে রক্তদান ও গ্রহণ করতে হবে। বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সাধারণ মানুষকে রক্তদানে উৎসাহী করতে হবে। রক্তদান এক মহান সেবাকর্ম। তাই রক্তদানে শামিল হতে হবে।
রামিছা বিলকিছ জেরিন
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়