শেয়ার বিজ ডেস্ক: কানাডা এক্সপ্রেস এন্ট্রির মাধ্যমে প্রতি বছর বিভিন্ন দেশের মানুষকে সে দেশে বসবাসের সুযোগ করে দেয়। দেশটির ফেডারেল সরকারের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রক্রিয়াগুলোর একটি এই প্রোগ্রাম। এই এক্সপ্রেস এন্ট্রির ড্র আগামী জুলাই থেকে ফের শুরু হতে যাচ্ছে। এবার এতে বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। খবর: দি ইকোনমিক টাইমস।
চলতি বছর বাজেট অধিবেশনে আইনপ্রণেতারা জানান, এক্সপ্রেস এন্ট্রিতে পরিবর্তন আসছে। দেশটিতে কাজ ও স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য কয়েক ধরনের ইমিগ্রেশন প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম এক্সপ্রেস এন্ট্রি ইমিগ্রেশন প্রোগ্রাম। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের দক্ষ কর্মীরা কয়েকটি ক্যাটেগরিতে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধিশালী কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পান।
কানাডা সরকার পয়েন্টভিত্তিক এ প্রোগ্রামে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করছে। প্রস্তাবিত বিলে বলা হয়েছে, নতুন প্রক্রিয়ায় একাডেমিক যোগ্যতা ও শিল্পভিত্তিক পেশার মতো মানদণ্ডকে গুরুত্ব দেয়া হবে। দেশটির অভিবাসনমন্ত্রী শন ফ্রেজার ইঙ্গিত দিয়েছেন, প্রোগ্রামটি এখন যে অবস্থানে রয়েছে সে বিষয়গুলো নিয়ে অংশীদারদের সঙ্গে অথবা পাবলিক ফোরামে আলোচনা ও পর্যালোচনা করা হবে।
বর্তমানে এক্সপ্রেস এন্ট্রিতে বয়স, শিক্ষা, কাজের অভিজ্ঞতা, কাজের অফার ও ভাষার দক্ষতার মতো বিষয়গুলো ব্যবহার করে একটি সাধারণ পুল থেকে প্রার্থীদের স্থান দেয়া হয়। যারা প্রয়োজনীয় চাহিদা সঠিকভাবে পূরণ করতে পারেন, তারা দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারেন।
এক্সপ্রেস এন্ট্রিতে তিন ধরনের প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। এর একটি কানাডিয়ান অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শ্রেণি, অর্থাৎ যাদের কানাডায় চাকরির এক বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। দ্বিতীয়টি, ফেডারেল স্কিলড ট্রেডার্স প্রোগ্রাম। এতে দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্নদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সবশেষে রয়েছে ফেডারেল দক্ষ কর্মী প্রোগ্রাম, অর্থাৎ যাদের কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তারা আবেদন করতে পারবেন।
ভবিষ্যতে কানাডার শ্রমবাজারের চাহিদা ও শ্রমিকের অপর্যাপ্ততার ওপর ভিত্তি করে নানা পেশাভিত্তিক ড্র হবে। এটা হবে অনেকটা অস্ট্রেলিয়ার স্কিলড মাইগ্রেশনের প্রোগ্রামের মতো। ভবিষ্যতে শুধু কমপ্রিহেনসিভ র্যাংকিং সিস্টেম (সিআরএস) স্কোরের ওপর ভিত্তি করে এক্সপ্রেস এন্ট্রি পুল থেকে ইনভাইটেশন ইস্যু করা হবে না। বরং ন্যাশনাল অকুপেশনাল ক্লাসিফিকেশনের (এনওসি) কোডভিত্তিক ও বিশেষ স্কিলসভিত্তিক ড্রয়ের মাধ্যমে এক্সপ্রেস এন্ট্রি পুল থেকে অ্যাপ্লিকেশন সিলেকশন করে আবেদনের যোগ্যতা (আইটিএ) অর্জন করা যাবে।
নতুন যোগ্যতায় কোন ক্রাইটেরিয়া থাকবে, তা দেশটির অভিবাসনমন্ত্রী নির্ধারণ করবেন এবং বাছাই করা হবে শ্রমবাজারের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে। যেমন প্রযুক্তি খাতে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ কর্মী দরকার, সেক্ষেত্রে তাদের ওই এনওসি কোডে অভিজ্ঞতা, শিক্ষা প্রভৃতি শর্তের ওপর ভিত্তি করে আবেদনকারীর জন্য আইটিএ ইস্যু করা হবে। একই বিষয় প্রযোজ্য হবে স্বাস্থ্যসেবা খাতেও। তবে বর্তমানে ইমিগ্রেশন, রিফুইজি অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কানাডার (আইআরসিসি) কাছে এ ধরনের পেশার তালিকা নেই। এ ধরনের পেশার তালিকাসহ নানা বিষয় এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। নতুন বিলটি পাস হলে আইআরসিসি এক্সপ্রেস এন্ট্রি পুল থেকে চাহিদামতো পেশা অথবা বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন আবেদনকারীকে আমন্ত্রণ করা যাবে, যে সুযোগ বর্তমানে নেই।
তবে কানাডাসহ অন্য দেশের অভিবাসন প্রক্রিয়া সবসময় পরিবর্তনশীল। এর ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই দিকই রয়েছে। বিদ্যমান এক্সপ্রেস এন্ট্রি শুধু বয়স ও ভাষাগত দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে ইনভাইট করে যাতে অর্থনীতির চাহিদা পূরণে ঠিকভাবে কাজে লাগছে না। নতুন এন্ট্রিতে শুধু ভাষাগত দক্ষতা (আইইএলটিএস) ও বয়সই সব নয়, পেশা ও ফ্রেঞ্চ ভাষাগত দক্ষতাও বড় ভ‚মিকা রাখবে। বিশেষ করে বয়স্ক আবেদনকারীও ফ্রেঞ্চ ভাষায় দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে এক্সপ্রেস এন্ট্রিতে সফল হতে পারবেন। এ বিষয়টি নিঃসন্দেহে উৎসাহবাঞ্জক। তবে কিছু পেশাজীবী বেশি সিআরএস পয়েন্ট নিয়েও এক্সপ্রেস এন্ট্রি পুল থেকে পেশার চাহিদা না থাকার কারণে ইনভাইটেশন পাবেন না। তবে তারাও ফ্রেঞ্চ ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে কানাডার অভিবাসনে সফল হতে পারবেন।