নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত কয়েক সপ্তাহজুড়ে দেশের পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে। ঢাকা স্টক একচেঞ্জে (ডিএসই) সর্বশেষ ৯ কার্যদিবসের মধ্যে সাত কার্যদিবসে সূচকের পতনে প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ২১০ পয়েন্ট। এতে সূচক নেমে এসেছে পাঁচ হাজার ৩৮৩ পয়েন্টে। দেশে চলমান কারফিউর মধ্যে তিন কার্যদিবস লেনদেন বন্ধ থাকার পর গত বুধবার সীমিত সময়ের জন্য লেনদেন চালু হয় পুঁজিবাজারে, এদিন সূচকের বড় পতন হয়। অবশ্য পরের কার্যদিবস বৃস্পতিবার সূচকের উত্থান ঘটে। তবে এক কার্যদিবস উত্থানের পর সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গতকাল রোববার পুঁজিবাজারে ফের সূচকের পতন ঘটেছে। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল রোববার লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
তবে প্রথম আধা ঘণ্টার লেনদেন পার হতেই বদলে যেতে থাকে বাজারের চিত্র। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে যায়। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকে। অবশ্য অন্য খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমলেও বিপরীত চিত্র দেখা যায় ব্যাংকের ক্ষেত্রে। দাম কমার বদলে বেশিরভাগ ব্যাংক দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৮৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২১৬টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্যদিকে ২০টি ব্যাংকের দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ৬টির। এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স ২৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৭৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯২১ পয়েন্টে নেমে গেছে।
সূচকের পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের গতি। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৮৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৯৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এই লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে অগ্নি সিস্টেমের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এনআরবি ব্যাংকের ১৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফারইস্ট নিটিং।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑমিডল্যান্ড ব্যাংক, লাভেলো আইসক্রিম, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ওরিয়ন ইনফিউশন, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ২০৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৭টির এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।