নিজস্ব প্রতিবেদক: বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) আয়োজনে সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট, ২০২১’ সম্পন্ন হয়েছে। এ সম্মেলনে বিভিন্ন খাতে এক দশমিক ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেছে বলে আয়োজকরা জানান।
সামিটের সমাপনী উপলক্ষে গতকাল রাজধানীতে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, কভিড-১৯-পরবর্তী বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সক্ষমতা তুলে ধরা হয়েছে সম্মেলনে। বাংলাদেশ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন করে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার পর বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সক্ষমতা অর্জনের জন্য পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে। বিশ্ববাণিজ্যে প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ এখন প্রস্তুত। আমাদের বাণিজ্য সক্ষমতা বেড়েছে, দেশের রপ্তানি দিনদিন বাড়ছে।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিটে ৩৮টি দেশের ৫৫২টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। বিভিন্ন ভার্চুয়াল সেমিনারে ৬২০ বিশিষ্ট অতিথি অংশগ্রহণ করেন। ৩৬৯টি বি-টু-বি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন খাতে এক দশমিক ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেছে। একটি চীনা কোম্পানি অবকাঠামো খাতে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ১৩টি দেশের ২০টি কোম্পানি জয়েন্ট ভেঞ্চারে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় ছয়টি খাতে ছয়টি দেশ বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ১৪টি দেশ বাংলাদেশের ২৬টি পণ্য আমদানি করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিটের বিস্তারিত তুলে ধরেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ডিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্য সচিব বলেন, বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ এখন উপযুক্ত স্থান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাকিগুলোর উন্নয়ন কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। এরই মধ্যে অনেক দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে এগিয়ে এসেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বড় ধরনের বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ এখন প্রস্তুত।
বাণিজ্য সচিব বলেন, দেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। বেসরকারি খাতও এগিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের সক্ষমতা এখন দৃশ্যমান। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এ ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ও কর সুবিধা দেয়া হচ্ছে। বিনিয়োগের জন্য সব আনুষ্ঠানিকতা সহজ করা হয়েছে। ওয়ানস্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে দ্রুত কাজ করা হচ্ছে। দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে সুরক্ষা দিয়ে সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এফটিএ বা পিটিএর মতো চুক্তি করে বাণিজ্য সুবিধা আদায় করার জন্য সরকার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।