নিজস্ব প্রতিবেদক: মহামারি কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে দেশে গত এক দিনে আরও ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে আরও এক হাজার ৪৯ জন। গতকাল বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশে কভিড-১৯ পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য জানানো হয়।
গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত এক হাজার ৪৯ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ লাখ ৯ হাজার ১৪৮ জন হয়েছে। আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ২৪ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা সাত হাজার ৪৫২ জনে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও এক হাজার ৪৭৩ রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে চার লাখ ৫১ হাজার ৯৬১ জন হয়েছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, যা পাঁচ লাখ পেরিয়ে যায় ২০ ডিসেম্বর। এরই মধ্যে গত ২ জুলাই চার হাজার ১৯ কভিড রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ১২ ডিসেম্বর তা সাত হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ২৭তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৩তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৪টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৪টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ২৯টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাব, অর্থাৎ সর্বমোট ১৬৭টি ল্যাবে ৯ হাজার ৯১২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৩১ লাখ ৭১ হাজার ৯১০টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার আট দশমিক ২৯ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৬ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৬ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৫ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৩টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ছয় লাখ ৫৪ হাজার ২২৭টি। গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে আছেন ১৬ পুরুষ ও আট নারী। তাদের ২৩ জন হাসপাতালে এবং একজন বাড়িতে মারা গেছেন।
তাদের মধ্যে ১৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, সাতজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, একজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ১৭ জন ঢাকা বিভাগের, তিনজন চট্টগ্রাম বিভাগের, দুজন করে মোট চারজন খুলনা ও রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া সাত হাজার ৪৫২ জনের মধ্যে পাঁচ হাজার ৬৭৫ জনই পুরুষ এবং এক হাজার ৭৭৭ জন নারী। তাদের মধ্যে চার হাজার ৫৮ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া এক হাজার ৮৯৪ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৮৭৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩৭৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৫৯ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৫৭ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৪ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
এর মধ্যে চার হাজার ৮১ জন ঢাকা বিভাগের, এক হাজার ৩৮৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৩১ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫২৫ জন খুলনা বিভাগের, ২৩৬ জন বরিশাল বিভাগের, ২৯০ জন সিলেট বিভাগের, ৩৩৬ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৬৪ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।