এক দিনে গদখালীতে ১৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি

মীর কামরুজ্জামান মনি, যশোর: কভিডের নতুন ধরন ওমিক্রনের শঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের গদখালীর ফুল বাজার। কভিডের কারণে গত দু’বছর গদখালী অঞ্চলের ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরা যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন, পহেলা ফাল্গুন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘিরে আবারও হাসি ফুটেছে ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীদের মুখে।

গতকাল বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত ঘিরে গদখালী বাজারে ইতোমধ্যে বিক্রি হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকার ফুল। বাজার চাঙ্গা থাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আগ পর্যন্ত ২০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রতি বছর ফুলের বাজার জমজমাট হয়ে ওঠে ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত। এ সময় ফুলের দাম থাকে বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি। বর্তমানে গদখালীতে সব ধরনের ফুলের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হয়েছে ১৫-২০ টাকা, যা কয়েকদিন আগেও বিক্রি হয়েছে মাত্র ১-৫ টাকায়। জারবেরা বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ৮-১২ টাকায়। এছাড়া গাঁদা ফুল বিক্রি হচ্ছে প্রতি হাজার ৫০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত; যা কয়েকদিন আগেও ছিল ২০০-৩০০ টাকা।

জানা গেছে, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী অঞ্চলে প্রায় পাঁচ হাজারের মতো ফুলচাষি রয়েছেন। চলতি বছর প্রায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার ফুল চাষ হয়েছে। গদখালী, পানিসারা, নাভারণ, নির্বাসখোলার চাষিরা প্রায় ১১ ধরনের ফুল উৎপাদন করেন। এখানকার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, রজনী গন্ধা, জিপসি, রডস্টিক, কলনডালা, চন্দ্রমল্লিকাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল শোভা পায়। ফুলের রাজধানী গদখালীতে এ বছর নতুন সংযোজন হয়েছে টিউলিপ আর লিলিয়াম। নিজ সৌন্দর্যে উদ্ভাসিত এ ফুল মানুষের ভালোবাসায় রঙিন হয়ে উঠেছে।

গতকাল পানিসারা এলাকার ফুল ব্যবসায়ী তারেক জানান, বসন্তবরণ ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে প্রচুর ক্রেতা এসেছেন। জমজমাট বেচাকেনা হয়েছে। দোকানে রাখা ফুলের মালা যে যার পছন্দমতো কিনেছেন। ফুলভেদে প্রতিটি মালার দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি হয়েছে। দামের দিকে নজর নেই ফুলপ্রেমীদের। বরং ভালোবাসার মানুষটিকে খুশি করাই সবার লক্ষ্য।

ফুল ব্যবসায়ী মাসুদ জানান, দোকানে সব ধরনের ফুলই বিক্রি হয়েছে। সাধারণত যুগলরাই এসেছেন বেশি। পরিবার নিয়েও এসেছেন অনেকে। যে যার পছন্দমতো ফুল কিনছেন। তবে অন্যান্য ফুলের তুলনায় গোলাপের দাম বেশি। আমরা প্রতি পিস ২০ টাকা বিক্রি করছি।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, ৫ ফেব্রুয়ারির পর থেকেই আমাদের এখানকার ফুলের বাজার জমজমাট হয়। করোনার শঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মানুষ ফুল কিনছেন। ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত ঘিরে প্রায় ১৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। বিক্রির এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করেন তিনি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০